ব্যুরো নিউজ, ২ নভেম্বর: সাধক কমলাকান্তর সাধনা থেকেই কমলাকান্ত কালী
১২১৬ বঙ্গাব্দে শক্তি সাধক কমলাকান্তকে চান্না গ্রাম থেকে বর্ধমানে নিয়ে আসেন মহারাজ। মহারাজ তেজ চাঁদ তাকে সভাপণ্ডিতও করেন। তখন থেকেই শক্তি সাধক বর্ধমানে তাঁর সাধনা ক্ষেত্র গড়েতোলেন।
মহারাজ তেজচাঁদ কোটালহাটে ১২ কাঠা জমির উপর মায়ের মন্দির এবং সাধকের থাকার ব্যবস্থা করেন। এরপর থেকে সাধক কমলাকান্ত পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে দিনের পর দিন সাধনা করতে থাকেন। পিছনে বেলগাছের তলায় চলতে থাকে কাল ভৈরবের পূজা।
কীভাবে নিম কাঠের প্রতিমা থেকে ভৈরবেশ্বরী হয়ে উঠলেন বাড়ির মেয়ে?
কারণ শক্তিকে জাগ্রত করতে হলে শিবকে চাই। একটি নিমগাছের তলায় তিনি চণ্ডাল, শৃগাল ও বানরের মুখ দিয়ে পেতেছিলেন ত্রিমুণ্ডীর আসন। এবং শেষ পর্যন্ত সাধনার দ্বারা তিনি সিদ্ধি লাভ করেন। কমলাকান্ত মারা গেলেও স্থানটি হিন্দু তীর্থ হয়ে ওঠে।
কমলাকান্ত কালীর মূর্তিটি প্রায় ১২-১৪ হাত লম্বা মাটির মূর্তি। বারো মাস মায়ের মূর্তি থাকে, তবে আশ্বিন মাসের দ্বাদশী অথবা ত্রয়োদশীতে এই মূর্তি নিরঞ্জন হয়। পুনরায় নতুন করে মূর্তি তৈরী হয়।
কমলাকান্তের কালী মন্দিরে দু’শো বছরেরও বেশি সময় ধরে পুজো হয়ে আসছে। তবে এ মন্দির পরিচিত ‘কমলাকান্ত কালীবাড়ি’ নামেই।
এখানে কমলাকান্ত কালীর নিত্য পূজা হয় বেশ শুদ্ধাচারেই। নিত্য মাকে ভোগও দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় মায়ের লুচি-মিষ্টি ভোগ হয়। ত্রিসন্ধ্যায় মায়ের আরতি-পূজা হয়। প্রতি শনিবার সন্ধ্যায় বারের পূজাও করা হয়। প্রতি অমাবস্যায় নিষ্ঠার সঙ্গে মায়ের হোম-যজ্ঞ করা হয়।
এখনও মায়ের পূজায় এবং মানত পূজায় ছাগ বলি হয়। বিশেষ অনুষ্ঠানে ভক্তরা পুজোর ডালি সাজিয়ে মায়ের পুজো দিতে আসেন। নববর্ষ, বিজয়া দশমী, মঙ্গলচণ্ডী পূজা, বিপদত্তারিণী পূজার দিনগুলিতেও এখানে পূজার্চনা চলে।
প্রতি দিন কালীর পুজোয় মাগুর মাছের ভোগ খাওয়াতেন সাধক কমলাকান্ত। সেই রীতি মেনে আজও মা কালীকে প্রত্যেক দিন মাগুর মাছের ভোগ দেওয়া হয়।
শ্যামাপূজার সময় বেশ আড়ম্বরে পূজা হয়। কার্তিক মাসের ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার দিন কমলাকান্ত মন্দিরে প্রতি বৎসর বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ (বর্ধমান শাখা), বর্ধমান সংস্কৃতি পরিষদ ও কমলাকান্ত কালী সমিতি সমবেতভাবে কমলাকান্ত দিবস পালন করেন। সংবাদ মাধ্যমের সাহায্য নিয়ে লেখা। ইভিএম নিউজ