ভাইফোঁটা

ব্যুরো নিউজ, ১৩ নভেম্বর: ভাইফোঁটার সাতকাহন 

“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা,

যমের দুয়ারে পড়লো কাঁটা,

যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা,

আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা”।

আগামী ১৪ই নভেম্বর অর্থাৎ বুধবার ভাইফোঁটা বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। এই উৎসব ভাই ও দাদাদের কল্যান কামনার জন্যে বোন ও দিদিদের দ্বারা পালিত হয়। এই দিনে সকল বোন ও দিদিরা, ভাই ও দাদাদের কল্যানের জন্যে কপালে দই ও চন্দনের ফোঁটা লাগিয়ে এই দিনটিকে পালন করে। তারপর মাথায় ধান, দূর্বা দিয়ে ছোট ভাইদের আশীর্বাদ করা হয় ও দাদাদের থেকে আশীর্বাদ নেওয়া হয়। এইভাবেই ভাই বোনের পারস্পরিক বন্ধন বজায় থাকে। তাদের মধ্যে একে অপরকে রক্ষা করবার অঙ্গীকার সৃষ্টির মধ্য দিয়েই যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া উৎসব। ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার প্রথা অনুযায়ী  ভাইয়ের আয়ু বৃদ্ধির কামনা করে বোনেরা উপোস করে থাকে। সকালে স্নান করে ভাই ও দাদার কপালে মঙ্গল কামনা করে তারা ফোঁটা দেয়।

ফোঁটা দেওয়ার সময় বোন ও দিদি, ভাই ও দাদাদের কপালে কড়ে আঙ্গুল ঠেকিয়ে মন্ত্র উচ্চারণ করে যে, “ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পরলো কাঁটা, যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা”- অর্থাৎ মৃত্যুর দেবতা যমরাজের পথে কাঁটা দিচ্ছে বোনেরা ফোঁটার মাধ্যমে, এই ভাইফোঁটা দেওয়ার মাধ্যমে তাদের ভাইদের আয়ু বৃদ্ধি হবে এই আশায়। হিন্দু সনাতন ধর্ম অনুসারে কথিত আছে যে ভাইফোঁটার দিন যমরাজের বোন যমুনাকে যমরাজ কথা দিয়েছিলেন যে এই দিন যে সকল বোনেরা তার ভাইদের ফোঁটা দেবে তাদের আয়ু বৃদ্ধি হবে। সেই থেকেই বোনেরা তাদের ভাইদের মঙ্গল কামনায় উপোস করে এই অনুষ্ঠান পালন করে।

গ্রামের পুজোয় শহুরে ছোঁয়া

ভাইফোঁটার ক্ষেত্রে বোনেরা ভাইদের কপালে বাঁ হাতের কড়ে আঙুল দিয়ে চন্দন ও দইয়ের ফোঁটা দেয়। কিন্তু কেন ভাইফোঁটায় চন্দন ও দইয়ের ব্যবহার হয় তা কি সবাই জানে? আসলে সনাতন ধর্ম অনুসারে এই যে রীতি প্রচলিত তার পিছনে এক মঙ্গল বিধান রয়েছে। প্রচলিত রয়েছে, কপালে চন্দনের ফোঁটা বা দইয়ের ফোঁটা দিলে নাকি মাথা ঠান্ডা থাকে। এক‌ইসাথে ধৈর্য শক্তি বৃদ্ধি পায় ও মন শান্ত থাকে। দই ও চন্দনের তিলক কপালে দেওয়ার ফলে একাগ্রতা বাড়ে। তাই ভাইফোঁটায় অন্য সকল দ্রব্য বাদ দিয়ে কেবলমাত্র চন্দন ও দই দিয়েই ফোঁটা দেওয়া হয় ভাইয়ের কপালে।

অন্যদিকে তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা ইত্যাদি আঙুল বাদ দিয়ে কড়ে আঙ্গুল দিয়ে ভাইকে ফোঁটা দেওয়া হয়, তার কারণ হলো মানবদেহের পাঁচটি আঙ্গুল পাঁচটি ইন্দ্রিয় অর্থাৎ ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোমের প্রতীক। সেই হিসাব অনুযায়ী মানুষের দেহের কড়ে আঙুল হলো মহাশূণ্যের প্রতীক। ভাই বোনের ভালোবাসা ও সম্পর্ক অসীম আর তা বোঝানোর জন্যই মহাশূন্যের প্রতীক স্বরূপ এই আঙুল দিয়ে ফোঁটা দেওয়ার বিধান প্রচলিত ভাই ফোঁটার দিনে। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর