জয়দীপ মৈত্র, ৩ মে: (Latest News) বংশপরম্পরায় আজও মাদুর কাঠি চাষ ও মাদুর তৈরি করে চলেছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের কুশকারী এলাকার পীরপুকুর গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার।

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী পঞ্চায়েত বংসারী ব্লক এলাকার বিভিন্ন জায়গাতে বিশেষ করে হরিরামপুর, কুশকারী, ধুমশা দীঘি সহ বিভিন্ন গ্রামে বংশপরম্পরাকে প্রাধান্য দিয়ে আজও মাদুর শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য দেবনাথ পরিবারের সদস্যরা মাদুর তৈরি করে চলেছেন।

জানা গেছে, এই এলাকার প্রত্যেকটি বাড়ির সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের নিজস্ব জমি বা অন্যের জমি চুক্তিবদ্ধ করে নিয়ে মাদুরকাঠির চাষ করে মাদুর তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করছেন। আর এতেই তাদের লক্ষ্মীর ভার পূর্ণ হচ্ছে। মাদুর তৈরি করে সেই আয়ের টাকায় সংসার চলে এই এলাকার শতাধিক পরিবারের।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর ফাল্গুন চৈত্র মাসে জমিতে মাদুরকাঠির চাষ করা হয় এবং আশ্বিন কার্তিক মাসে মাদুর কাঠি জমি থেকে কেটে বাড়িতে তোলা হয়। বছরে একবার জমিতে বীজ বপন করলে  তিন বছরে আর  নতুন করে চাষ করবার প্রয়োজন পড়ে না, সেই বীজেই নতুন মাদুরকাঠি তৈরি হয়। এর পর সেই মাদুরকাঠি থেকে তারা মাদুর তৈরি করে বাজারে বিক্রি করবার জন্য প্রস্তুত করে। তারা সারাদিনে  প্রায় আট থেকে দশটি মাদুর তৈরি করে। বিভিন্ন হাটে বাজারে পাইকারি দরে ২০০ থেকে আড়াইশো টাকা হিসেবে বিক্রি করা হয় মাদুর।

তথাকথিতভাবে মাদুর শিল্পকে বাঁচাবার জন্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশকারী এলাকার পীর পুকুরের প্রায় শতাধিক পরিবার মাদুর শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন বংশ পরম্পরায় চলে আসা কার্যের মধ্য দিয়ে তা বলায় বাহুল্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও কোনরকম কোনো সরকারি  সুযোগ সুবিধা পাননি বলে অভিযোগও করেন ওই এলাকার একাংশ মাদুর শিল্পীরা।

এই বিষয়ে মাদুর শিল্পী সুশীল দেবনাথ (৬০) জানান, “বাপ ঠাকুরদার আমল থেকে চলে আসা ব্যবসাকে টিকিয়ে রেখেছি বংশপরম্পরার মধ্যে দিয়ে, তবে বাজারে জিনিসের দ্রব্যমূল্য হওয়ার ফলে আমাদের মাদুর তৈরি করা চাষ করা বড় দুষ্কর হয়ে উঠেছে। কোনরকম কোনরূপ সরকারি সহযোগিতা না পাওয়ায় খুবই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি আমরা তথা এই মাদুর শিল্পীরা। পাশাপাশি এই মাদুর তৈরি করবার জন্য নানা রকম রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয় কিন্তু তা প্রাকৃতিক । মাদুর বিক্রি করবার পর বছরের একটা লাভের অংশ আসলেও জিনিসের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারনে সেখান থেকে বেশির ভাগটাই খরজ হয়ে জায়। ফলে খুব কষ্টে দিন গুজরান করতে হয়। সরকারি সহযোগিতা পেলে খুব উপকার হত।

সর্বশেষে বলাবাহুল্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশকারী এলাকার বিভিন্ন গ্রামের এই মাদুর শিল্পীরা বংশপরম্পরার টানে আজও নস্টালজিয়া এই মাদরশিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তাদের  অক্লান্তিক পরিশ্রমের মাধ্যমে। (EVM News)

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর