ব্যুরো নিউজ, ৪ সেপ্টেম্বর: নাব্যতা হারাচ্ছে মুড়িগঙ্গা | জীবন বাজি রেখে চলছে পারাপার

ধীরে ধীরে নাব্যতা হারাচ্ছে মুড়িগঙ্গা। মুড়িগঙ্গা নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণে কার্যত সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। মুড়িগঙ্গা নদীতে পলি জমে যাওয়ায় ভাঁটার সময় নাব্যতা কমে যায়। ফলে প্রত্যেকদিন প্রায় ৬ ঘন্টারও বেশি সময় বন্ধ রাখতে হয় ভেসেল পরিষেবা।

প্রতিনিয়ত এক চিত্র দেখতে দেখতে কার্যত ক্ষুদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন দ্বীপ এলাকার বাসিন্দারা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ ও সাগর দ্বীপের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া মুড়িগঙ্গা নদীতে পলি জমে যাওয়ায় ভাটার সময় নাব্যতা কমে যায়। ফলে প্রত্যেকদিন প্রায় ৬ ঘন্টারও বেশি সময় বন্ধ রাখতে হয় ভেসেল পরিষেবা। কেবলমাত্র জোয়ারের সময় ভেসেল পরিষেবা স্বাভাবিক থাকে। আর ভাটার সময় নদী পারাপারের জন্য ছোট ডিঙি নৌকোর উপর ভরসা করতে হয় নিত্যযাত্রীদের।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ জামা কাপড় গুটিয়ে নেমে পড়ে মুড়িগঙ্গা নদীর চড়ায়। ভেসেল ঘাট থেকে প্রায় ১ কিলোমিটারের বেশি জল-কাদার উপর দিয়ে নদীর মাঝ বরাবর গিয়ে এক কোমর জলে নেমে ভুটভুটিতে উঠতে হয়। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদেরকেও এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। ভুটভুটি বা ভেসেল চড়ায় আটকে গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা মাঝ নদীতে বসে থাকতে হয়। এভাবেই প্রতিনিয়ত জীবন হাতে নিয়ে পারাপার করতে হয় নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে সাগরদ্বীপের বাসিন্দাদের।

তবে ভেসেল পরিষেবা বন্ধ থাকলে সেই সুযোগে লাভ ওঠাচ্ছে নৌকার মালিকরা। যেখানে কাকদ্বীপের লর্ড নম্বর ৮ থেকে গঙ্গাসাগর দ্বীপের কচুবেড়িয়া যাওয়ার জন্য মাথাপিছু ভাড়া ৯ টাকা সেই ভাড়া মাথাপিছু ৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে। কার্যত এই অবস্থার জন্য প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পারাপার। এই বিষয় নিয়ে শাসক দলকেই ইতিমধ্যেই দায়ী করছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা অরুণাভ দাস জানান, মুড়ি গঙ্গা নদীতে নব্যতা ফেরাতে ড্রেজিং এর জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। কিন্তু সেই টাকা যাচ্ছে কোথায়? যাত্রীদের কার্যত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা নিজের পকেট ভরাচ্ছে।

দ্বীপ এলাকার মানুষরা কার্যত ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন। কয়েক কিলোমিটার হাঁটার সময় যদি হঠাৎ করে হরপা বান আসে তাহলে বহু মানুষ প্রাণ হারাবেন। মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেসিংয়ের নাম করে কয়েক লক্ষ কোটি টাকা হরিলুটের বাতাসার মতো লুট করছে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা। কার্যত মুড়িগঙ্গা নদীর নব্যতা হারানোর কথা স্বীকার করে নেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। তিনি বলেন, একথা সত্যি যে পলি পড়ার কারণে মুড়িগঙ্গা নদীর নব্যতা হারাচ্ছে। নদীর নব্যতা অনেকটাই কমে গিয়েছে , তার জেরে ছোট ছোট নৌকা বা ট্রলারে করে মানুষজনকে পারাপার হতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা প্রশাসন ইতিমধ্যেই অবগত।

পোলট্রি ফার্মের আড়ালে নিষিদ্ধ শব্দবাজি

গঙ্গাসাগর মেলার বিষয়টি মাথায় রেখে কয়েক মাসের মধ্যেই মুড়িগঙ্গার নদীর ড্রেসিংয়ের কাজ শুরু করবে রাজ্য সরকার। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় চিকিৎসক অনুপ কুমার দাস জানান, এই সমস্যা দীর্ঘদিনের সমস্যা। কিন্তু প্রশাসন এই সমস্যার সমাধান করার জন্য কোন প্রকার হেলদোল দেখাচ্ছে না। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করতে হয় সকলকে। সাগরে কোনও উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা উদাসীন। কবে সমস্যা সমাধান হবে তা জানা নেই। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর