রাজীব ঘোষ, ২৭ আগস্ট: দীঘাতেই গোয়ার ফিলিংস! পুজোয় সমুদ্রবক্ষে ঘুরে বেড়ান প্রমোদতরীতে, এবার আরও মোহময়ী দীঘা।

উঠল বাই তো দীঘা যাই। বাঙালি দু একদিনের ছুটি পেলেই সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশ্যে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। দুদিনের ছুটি বা Weekend, তা যাই বলুন না কেন, বাঙালির প্রথম পছন্দ এখনও দীঘার সমুদ্র সৈকত। অনেকেই বলে থাকেন, মিনি গোয়া। সত্যি দীঘার অপরূপ সৌন্দর্য কখনোই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। শুধু বিচে বসেই সারাটা দিন কাটিয়ে দেওয়া যায়। সমুদ্র স্নান তো রইলোই। মেরিন ড্রাইভ ধরে ছুটে চলে যান দূর থেকে দূরান্তে।

একটু একটু করে সেজে উঠছে দীঘা। প্রায় প্রতিনিয়তই দীঘার সৌন্দর্য বেড়েই চলেছে। এখন তো দীঘায় যাওয়ার কথা ভাবলে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে হয়। তার কারণ, ট্রেনের টিকিট, হোটেল বুকিং খুব সহজে আর মেলে না। তবে অন্য পদ্ধতিও রয়েছে। বহু বাস বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দীঘার উদ্দেশ্যে ছাড়ে। আর তাই পূজোর সময়ে দীঘাকে যাতে আরও মোহময়ী করে তোলা যায়, পর্যটকদের কাছে সেরা Destination হিসেবে গড়ে তোলা যায়, সেই লক্ষ্যে এবার গোয়ার মত দীঘাতেও চালু হতে চলেছে সুসজ্জিত প্রমোদতরী

এবার বিলাসবহুল প্রমোদতরীতে উঠে দীঘার সমুদ্রের বুক চিরে উপভোগ করতে পারেন অনাবিল সমুদ্রের রূপ। এতদিন তো শুধুমাত্র বিচে বসে সমুদ্রকে দুই চোখ ভরে দেখেছেন। এবার সমুদ্রের বুকে ভেসেলে চেপে রকমারি বিনোদনের মাঝে নতুন সমুদ্র যাত্রার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। চূড়ান্ত প্রস্তুতি হয়ে গিয়েছে। পুজোর সময় ভেসেল নামতে চলেছে দীঘার সমুদ্রে।

কি কি থাকছে প্রমোদতরীতে?
এর আগে কলকাতায় গঙ্গার বুকে প্রমোদতরী নামতে দেখেছেন অনেকেই। কিন্তু সমুদ্রের বুকে বাংলার পর্যটন মানচিত্রে বিলাসবহুল ভেসেলে করে সমুদ্র উপভোগ করা এই প্রথম। সব ঠিকঠাক চললে পুজোর মরশুমেই পর্যটকরা দারুন এই আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পেতে চলেছেন। ভেসেলটিতে মনোরঞ্জন এবং বিনোদনের সম্পূর্ণ ব্যবস্থা থাকবে। দীঘার কাছেই শংকরপুরের ন্যায়কালীমন্দির সংলগ্ন সমুদ্র এলাকা থেকে এই জলযানটি ছাড়বে। দীঘা, শংকরপুর, মন্দারমনির পাশাপাশি অন্যান্য খাঁড়ি এলাকাগুলিতেও ভ্রমণ করা যাবে এই ভেসেলে চড়ে। থাকছে আধুনিক রেস্তোরাঁ, সংস্কৃতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান, সন্ধের মায়াবী আলোয় পরিপূর্ণ নাচ গানের ব্যবস্থা। বাউল গান, লোকসংগীত থেকে আধুনিক গান সবই উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।

সমুদ্রবক্ষে ভেসেলে চড়ে সামুদ্রিক শোভা দেখতে দেখতে এই আনন্দ হাতছাড়া না করতে চাইলে পুজোর মরশুমে অবশ্যই চলে আসুন দীঘায়। পুরো ভ্রমণ শেষ হওয়ার পরে ফের ন্যায়কালী মন্দির এলাকাতেই ওই প্রমোদতরী ফিরে আসবে। এমভি নিবেদিতা নামে রাজ্য ভূতল পরিবহন নিগমের এই ভেসেলটি হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদকে দেওয়া হয়। তখন লক্ষ্য ছিল নদীর মোহনায় ঘুরবে ওই ভেসেল। কিন্তু এবার আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে দীঘার পর্যটকদের সমুদ্রের শোভা তুলে ধরতে ওই ভেসেলকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে সমুদ্রবক্ষে।

এছাড়াও ওল্ড দীঘা ও নিউ দীঘায় উন্নতমানের আধুনিক পার্ক তৈরি হচ্ছে। চালু হয়ে গিয়েছে ঢেউসাগর। দীঘা থেকে শৌলা পর্যন্ত সমুদ্র তীর বরাবর ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ রয়েছে। তার মাঝখানে রয়েছে ঝাউবন। আর এই অপরূপ অনাবিল মনোরম পরিবেশের শোভার মধ্যে দিয়ে উপভোগ করতে করতে চলবেন পর্যটকরা। সমুদ্রবক্ষে প্রমোদতরী দীঘার পর্যটন মানচিত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে।

দীঘা যাওয়ার জন্য এখন নতুন করে আর কিছু বলার দরকার নেই। প্রায় সকল বাঙালি জানেন, তবুও জেনে রাখা দরকার, হাওড়া থেকে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস, কান্ডারী এক্সপ্রেস, পাহাড়িয়া এক্সপ্রেস করে দীঘা যাওয়া যায়। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দীঘা যাওয়ার বহু বাস রয়েছে। তাছাড়া নিজের গাড়ি তো রইলই। দেরি না করে চেপে বসুন কোনও একটি যানবাহনে। আর গিয়েই প্রথমে যে কাজটি হবে তা হলো, হোটেল বুকিং। নিশিযাপনের জায়গা ঠিক করা। সবচেয়ে সস্তায় একমাত্র দীঘাতেই পাওয়া যেতে পারে হোটেল। ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে একেবারে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মূল্যের হোটেল রয়েছে। তাই আর দেরি না করে দীঘার নতুন সৌন্দর্যের শোভা উপভোগ করতে বেরিয়ে পড়ুন। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর