ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ১০ এপ্রিলঃ পঞ্চায়েত নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, রাজ্য রাজনীতিতে ততই ডামাডোল। দল বদলের একাধিক ঘটনাও সামনে আসছে। আর সেই সঙ্গেই আমরা দেখতে পাচ্ছি অসহিষ্ণুতার রাজনীতির বাড়বাড়ন্ত। বালুরঘাটের এক ঘটনা এই অসহিষ্ণুতার অগণতান্ত্রিক বাতাবরণ আবার সামনে এনে দিল।তাই এবার বালুঘাটের ঘটনায় এই মুহূর্তে তোলপাড় করে দিয়েছে গোটা রাজ্য রাজনীতি।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার এলাকার চারজন মহিলা বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। এরপরই শুক্রবার সন্ধ্যায় দেখা যায় তাঁদের তিনজনকে রাস্তায় দণ্ডি কাটতে। প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা দণ্ডি কাটার পর তৃণমূল কার্যালয়ে পৌঁছে তৃণমূলে যোগদান করেন তাঁরা। আর দণ্ডি কেটে তৃণমূলের কার্যালয়ে আসার পর তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মহিলা তৃণমূলের জেলা সভা নেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তী।আর বিজেপিতে তারা যোগ দিয়েছিল বলেই এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। এই ঘটনা সামনে আসতেই তুমুল আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে।
ওই চার মহিলার একজন জানিয়েছেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আর সেই ভুল শুধরে নিতেই তারা দণ্ডী কেটে জেলা কার্যালয়ে এসে ফের ত্তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি, বিজেপি মহিলা মোর্চার দাবি, প্রলোভন দেখিয়ে ওই মহিলাদের দলে যোগদান করানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ওইদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকেলেই দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাদ সনকইর এলাকার প্রায় ২০০ মহিলা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করে। স্থানীয় তৃণমূলের দাবি, BJP-তে যোগদান করা চারজন তৃণমূলে ফিরতে চেয়েছিলেন। আর সেই কারণে তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হয়। শুক্রবার তাঁরা বালুরঘাট শহরের কোর্ট মোড় থেকে দণ্ডি কাটতে কাটতে তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে যান এবং সেখানেই তাঁরা ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করেন।
অন্যদিকে, গোটা বিষয় প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা BJP-র সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী জানান, চাপ দিয়ে ২০০ জনের মধ্যে মাত্র তিন চারজনকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছে তৃণমূল। যেভাবে মহিলাদের দণ্ডি কাটানো হয়েছে তা লজ্জাজনক, মন্তব্য তাঁর। এই বিষয়টি নিয়ে মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হতে চেয়েছেন তিনি। সরব হয়েছেন রাজ্য BJP সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।
এই ঘটনার সমালোচনা করে শুক্রবার রাতেই টুইট করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, জোর করে বিজেপি থেকে তৃণমূলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আদিবাসী মহিলাদের যেভাবে অপমান করা হল, তা সমগ্র আদিবাসী সমাজের অপমান।
রাজ্যের তৃণমূল পরিচালিত সরকারের মন্ত্রী তথা আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বীরবাহা হাঁসদাও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, বিজেপিতে গিয়েছেন।পরে দণ্ডি কেটে ফিরে এসেছেন, এটা আমি কখনওই সমর্থন করি না।