কোন

ব্যুরো নিউজ, ২৫ নভেম্বর: কোন রাশিতে বিবাহ বিচ্ছেদের সম্ভাবনা প্রবল?  

বিবাহ হলো একজন পুরুষ ও একজন নারীর আর্থিক, সামাজিক, পারিবারিক, মানসিক ও শারীরিকভাবে আইনসম্মত পবিত্র বন্ধন। শুধুমাত্র একজন নারী ও পুরুষের মধ্যেই এই বন্ধন সীমাবদ্ধ থাকে না, এটা হলো একটা পরিবারের সমস্ত সদস্যের সঙ্গে আরেকটি পরিবারের সকল সদস্যের নতুন সম্পর্কের সূচনা। এবার স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে জীবন সুখের হবে তো? এটা কোটি টাকার প্রশ্ন। কিন্তু এর সঠিক উত্তর একমাত্র দিতে পারেন একজন বিদগ্ধ পণ্ডিত জ্যোতিষী। আমরা আমাদের চারপাশে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিকে দেখতে পাই যাদেরকে পৃথিবীর বহু মানুষ সুনামের সঙ্গে চেনে কিন্তু তাদের বিবাহিত জীবন বা দাম্পত্য জীবন মোটেই সুখের নয়। তাই হরোস্কোপ বা জন্ম ছকে হয়তো ক্যারিয়ার খুব ভালো আছে, দেখা গেল কিন্তু সঙ্গে এটাও দেখা গেল বিবাহিত জীবন খুবই অশান্তিপূর্ণ ও দুঃখের। এই ব্যাপারটা সবসময় মাথায় রাখতে হবে যে সুনাম, অর্থ, প্রতিপত্তি, জীবনে যেমন অতি প্রয়োজনীয় তেমনি সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে গেলে বিবাহিত জীবন সুস্থ ও সুন্দর সুখী হওয়া অতি প্রয়োজন। আমি অভিজ্ঞতায় দেখেছি যদি কারো ব্যক্তিগত জীবন বা বিবাহিত জীবন অসুখী হয় তবে তার বিভিন্ন রকম সাইকোসোমাটিক ডিসঅর্ডার দেখা যায়। যেমন অনিদ্রা, বিরক্তি ভাব, হাই ব্লাড প্রেসার, ও হাই ব্লাড সুগার ইত্যাদি।

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে ‘খুন’

এবার দেখা যাক বিবাহিত জীবনে নানা সমস্যা তৈরি হয় হরোস্কোপে কি বিশেষ অশুভযোগ থাকলে। যেকোনো হরোস্কোপ বা জন্ম ছকের লগ্ন কে প্রথম ভাব (ঘর) ধরে নিয়ে ঘড়ির কাটার বিপরীতে প্রতিটি ভাব বা ঘরকে গণনা করা হয়। সাধারণত সপ্তম ভাব থেকে বিবাহের বিচার করা হয়। সহযোগী ভাব দ্বিতীয়, যার থেকে পরিবারের সদস্য বৃদ্ধি ও একাদশ ভাব থেকে জাতক বা জাতিকার যাবতীয় ইচ্ছাপূরণ বিচার করা হয়। বিবাহের কারো গ্রহ শুক্র। এর সঙ্গে মঙ্গল ও বৃহস্পতিরও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বিবাহ ব্যাপারটা সুষ্ঠুভাবে সুসম্পন্ন হতে। হরোস্কোপে শনি ও চন্দ্র কোনভাবে সম্পর্কযুক্ত হলে পুনরফু যোগ হয়। এই যোগ হরোস্কোপে থাকলে বিবাহের প্রস্তাব বিবেচনার স্তরে, বিবাহের দিন নির্ধারণের সময়, এমনকি বিবাহের নিমন্ত্রণ কার্ড বিলি হয়ে যাওয়ার পরেও বিবাহ ভেঙে যায়। শনি যদি চন্দ্রের নক্ষত্রে অথবা চন্দ্র যদি শনির নক্ষত্রে অথবা শনি যদি তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, দশম ভাবে অবস্থান করে তবে এই অশুভ যোগ তৈরি হয়। সপ্তম ভাবের সঙ্গে যদি কোনোভাবে দ্বিতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, একাদশ ভাবের সম্পর্ক তৈরি হয় ও রাহু বা কেতুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয় তবে অসবর্ণ বিবাহ হবে।

সপ্তম ভাবের সঙ্গে যদি দ্বিতীয়, অষ্টমভাব ও রাহু বা কেতু বা শনির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় তবে নিম্ন বর্ণের বিবাহ হয়। মঙ্গলগ্রহের অবস্থান ভেদে বিভিন্ন রকম মাঙ্গলিক দোষে কুফল ভোগ করতে হয়। মাঙ্গলিক দোষ তৈরি হয় যখন জাতক বা জাতিকার হরোস্কোপে মঙ্গলের অবস্থান হয় লগ্নে বা চতুর্থে বা সপ্তমীর বা অষ্টমে বা দ্বাদশে। লগ্নে মঙ্গল অবস্থান করলে জাতক নিজেই সমস্যার কারণ হবে, চতুর্থে মঙ্গল অবস্থান করলে শ্বশুরবাড়ির কেউ বিশেষ করে শাশুড়ি ননদ ইত্যাদিরা বিবাহিত জীবন দুর্বিষহ করে তুলবে। সপ্তমী মঙ্গল থাকলে আপনার জীবন সঙ্গী সে স্বামী বা স্ত্রী, যেই হোক না কেন সে প্রচন্ড বদমেজাজি হবে ও তার জন্যই সংসারে অশান্তি, মামলা, এমনকি সম্পর্ক ডিভোর্স পর্যন্ত গড়াবে। অষ্টমী মঙ্গল অত্যন্ত অশুভ। অপমৃত্যু অকাল মৃত্যু বৈধব্য ও জননাঙ্গের রোগ নির্দেশ করে। দ্বাদশে মঙ্গল খুবই অশুভ। দ্বাদশে মঙ্গল থাকলে স্বামী ও স্ত্রীর শয্যাসুখ থাকে না। একই বাড়িতে আলাদা ঘরে বসবাস করবে বা একজন কর্মসূত্রে কলকাতা তো আর একজন নৈহাটিতে থাকবে বা সম্পূর্ণ আইনগত বিচ্ছেদ হয়ে যাবে।

অষ্টমে রাহু+মঙ্গল+রবি এই সংযোগ থাকলে জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনী আত্মহত্যা করে (খনার বচন)। সপ্তমে রবির অবস্থান ইগোর কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ আনে। সপ্তমে চন্দ্রের অবস্থানে অতিরিক্ত সেন্টিমেন্ট, আবেগের কারণে বিবাহিত জীবনে ছেদ করতে পারে। সপ্তমে বুধ একাধিক নারী বা পুরুষের সঙ্গে সঙ্গ, চারিত্রিক দোষ, সন্দেহ, বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হয়। সপ্তমে শুক্র যৌন রোগ , মাত্রাতিরিক্ত সুখ ভোগ, আনন্দ ফুর্তির মানসিকতা বিবাহিত জীবনের ছেদের কারণ হয়। সপ্তমে শনি যৌন জীবনে শৈত্যতা, কনজারভেটিভ মনোভাব, সাজসজ্জা, উৎসব পছন্দ না করা তথা বিবাহিত জীবনে দাড়ি টেনে দেয়। লগ্নে শনি থাকলে একই ফল হবে। সপ্তমে রাহু অতিরিক্ত ব্যভিচারী জীবন, উশৃংখলতা, নোংরামি ইত্যাদির কারণে বিবাহবিচ্ছেদ নিশ্চিত করে। সপ্তমে কেতু থাকলে বিবাহ হতেই চায় না। সপ্তমপতির সঙ্গে পঞ্চমপতি, দ্বিতীয়পতি, একাদশপতির কোনভাবে গ্রহগত বা নক্ষত্রিক সংযোগ হলে প্রেম বিবাহ সফল হবে। আবার সপ্তমপতির সঙ্গে পঞ্চমপতি ও  অষ্টমপতি যুক্ত হলে ও একাদশ ভাবের কোন সংযোগ না থাকলে প্রেম দীর্ঘদিন ধরে চললেও তা কোনভাবে বিবাহের রূপ পাবে না।

এছাড়া শুক্র, মঙ্গল ইত্যাদি যদি শনি বা কেতুর সঙ্গে সংযুক্ত হয় বা কোনভাবে না নাক্ষত্রিক সংযোগ তৈরি করে তবে বিবাহ হতে চায় না। বিবাহিত জীবনের ক্ষেত্রে বৃহস্পতির ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ। বিবাহ স্থানে (সপ্তম) বৃহস্পতির কোন শুভ দৃষ্টি না থাকলে বা বৃহস্পতি কোনোভাবে রাহু বা কেতুর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করলে বিবাহিত জীবন কখনোই সুখের হবে না। উচ্চশিক্ষিতা সুন্দরী হওয়া সত্ত্বেও বিবাহ বিলম্বিত হয়। পাত্রপক্ষ আসছে, দেখছে, মিষ্টি খেয়ে চলে যাচ্ছে,আর যাওয়ার সময় বলছে পরে জানাবো। ব্যাস এই পর্যন্ত তারপর আর কোন খবর নেই এই ভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকায় সেই মেয়েটি যাকে বারবার পাত্রপক্ষ দেখতে আসছে তার মনের অবস্থা কি হয় তা একবার মানবিক দৃষ্টি দিয়ে বিবেচনা করুন। আর অনেক অভিভাবক আছেন যারা গা ছাড়া মনোভাব দেখান যার ফলে বিয়েটাই আর হয়ে ওঠে না।

হরোস্কোপের সঠিক বিচার-বিশ্লেষণ করলে স্বামী বা স্ত্রীর চরিত্র কেমন হবে, কোন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থাকবে কিনা, শ্বশুর-শাশুড়ি ননদ দেওর ইত্যাদি বিবাহের পর পীড়নের কারণ হবে কিনা তা স্পষ্ট ভাবে ও সঠিকভাবে জানা যায়। একজন পন্ডিত জ্যোতিষী জাতক বা জাতিকার হরোস্কোপের নবাংশ ভাব চালিত চক্র, দশা, অন্তর্দশা, প্রত্যান্তরদশা, ইত্যাদির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার করে বলতে পারবেন বিবাহের বাধা কাটানোর উপায়, বৈধব্যযোগ  বা বিপত্নিক যোগ নিবারনের উপায়, বিবাহ বিচ্ছেদ আটকানোর উপায়। অবশ্যমভাবি হলে তা ঠিক কবে হবে তাও নির্ণয় করা। মেষ থেকে মীন রাশি ও লগ্ন অর্থাৎ এই বারটি রাশি ও লগ্নের কোটি কোটি মানুষ আছে সারা পৃথিবীতে। একই লগ্নের বা রাশির মানুষের ভাগ্য ভিন্ন হয়ে থাকে তাদের ব্যক্তিগত জন্মছকের তারতম্যের কারণে। তাই অমুক রাশির মানুষের একই হবে এভাবে বলা ভুল হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। ইভিএম নিউজ 

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর