ব্যুরো নিউজ, ১২ অক্টোবর: ১৭ দিন ধরে মায়ের আরাধনা | জানেন এই রাজবাড়ির পুজোর ইতিহাস?
সম্প্রীতির মেলবন্ধনে ১৭ দিন ধরে হয় মালদহের চাঁচল রাজবাড়ির পুজো।
মালদার চাঁচলে ছিল রাজবাড়ি। এখন রাজাও নেই। রাজত্বও নেই। রাজবাড়ির একটি অংশে তৈরি হয়েছে মহকুমা আদালত। আর একটি অংশে এখন কলেজ। একাংশে এখনও রয়েছে মন্দির। সময়ের তালে তাল মিলিয়ে রাজবাড়ির গৌরব স্তিমিত। কিন্তু ঐতিহ্যের গরিমায় আজও উজ্জ্বল তিনশো বছরেরও বেশি প্রাচীন এই রাজবাড়ির পুজো।
জন ধন অ্যাকাউন্টে কী কী পাবেন জানান কি?
সম্প্রীতির নিদর্শন চাঁচল রাজবাড়ির পুজো। ষষ্ঠীর ১২ দিন আগে কৃষ্ণা নবমী তিথি থেকে পুজো শুরু হয়। টানা ১৭ দিন ধরে চলে এই পুজো। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রত্যেকটা বনেদি বাড়ির পুজোর মতোই এই পুজোরও নিজস্ব কিছু ঐতিহ্য ও কাহিনি আছে।
জানা যায়, সতেরো শতকের শেষভাগ জুড়ে উত্তর মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকার রাজা ছিলেন রামচন্দ্র রায়চৌধুরি। ধর্মপ্রাণ প্রজাদরদী রাজা হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি ছিল। কথিত আছে, একবার রাজা দেবী চণ্ডীর স্বপ্নাদেশে মহানন্দার ঘাটে স্নান করার সময় তাঁর হাতে চতুর্ভুজা অষ্টধাতুনির্মিত মূর্তি উঠে আসে। দেবী চণ্ডীর অষ্টধাতুর মূর্তি সতীঘাটা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে রাজবাড়িতে এনে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। সেদিন থেকেই রাজবাড়িতে শুরু হয় দেবীর নিত্যপুজো।
প্রতিবছর মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হয় রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। পরবর্তীকালে পুজোর জন্য পাকা মন্দির নির্মাণ করেন। আজও প্রাচীন প্রথা মেনে সপ্তমী তিথিতে রাজবাড়ি থেকে দুর্গাদালানে নিয়ে আসা হয় অষ্টধাতুর চতুর্ভুজা মা চণ্ডীকে। দশমীতে তিনি ফের রাজবাড়িতে ফিরে যান। দীর্ঘ ১৭ দিন ধরে চলে পুজো।
রাজা নেই, রাজ্য পাটও নেই, তাই এই রাজবাড়ীর পুজো পরিচালনা করে ট্রাস্টি বোর্ড। তবু ও রাজার সেই প্রাচীন রীতি মনে আজও মালদহের রাজবাড়ীর দুর্গা পূজা হয়ে আসছে। প্রতিদিন পুজোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় চলে চন্ডীপাঠের আসর। যা দশমীর সন্ধ্যায় দেবী বিসর্জন পর্যন্ত চলে। সেই রীতি আজও মানা হয়।
দেবী এখানে চতুর্ভূজা সিংহবাহিনী। এলাকার মানুষের বিশ্বাস, চন্ডীমণ্ডপের দেবীর জন্যই তারা সুরক্ষিত। সেই আবেগ, বিশ্বাসে ভর করেই ভক্তি-নিষ্ঠা, ঐতিহ্যের ওই পুজোয় হাজির হন স্থানীয়রা। রীতি মেনে অষ্টমীর দিন কুমারী পুজোও হয়। ওই দিন গোটা চাঁচলই হাজির হয় চন্ডীমণ্ডপে।
সেই আদিকাল থেকে আজও দশমীর সন্ধ্যায় বিসর্জনের সময় সেখানকার অর্থাত্ মরা মহানন্দা নদীর ওপারের বৈরগাছি এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ লণ্ঠন নিয়ে পথ দেখান মাকে। সেই রীতি আজও প্রচলিত। ইভিএম নিউজ