ব্যুরো নিউজ, ১৭ নভেম্বর: সন্তান প্রসবে বিরল নজির গড়ল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল
সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে জটিল চিকিৎসা পরিষেবায় এক নজির সৃষ্টি করল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। টেস্ট টিউব পদ্ধতিতে যমজ সন্তানের মধ্যে একটি শিশু অপরিণত অবস্থায় গর্ভেই মারা যায়। সেই অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টায় আরেকটি গর্ভস্থ শিশুকে টানা ১২৫ দিন পর্যবেক্ষণে রেখে অবশেষে মায়ের হাতে পরিণত সুস্থ সন্তানকে তুলে দিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
‘ডিপফেক’ ইস্যুতে সরব প্রধানমন্ত্রী! কী বললেন মোদী?
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, বর্ধমান মেডিক্যালতো বটেই, রাজ্য কিংবা দেশ ও বিশ্বেও এই ‘ডিলেড ডেলিভারি অফ সেকেন্ড টুইন’-এর নিরিখে বর্ধমান মেডিক্যালের এই কৃতিত্ব গোটা দেশ তথা বিশ্বে প্রায় বিরল।
বর্ধমানের জামালপুর থানার কুলীনগ্রামের বাসিন্দা পম্পা প্রামাণিকের প্রথম থেকেই সন্তান প্রসবে সমস্যা ছিল। বর্তমানে তাঁর বয়স ৪১ বছর। প্রথম টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার প্রচেষ্টা ২০১৬ সালে ব্যর্থ হয়। তারপর কলকাতার বিভিন্ন নার্সিংহোমে দেখিয়েও কোনও ফল হয়নি।
চলতি বছরের মার্চ মাসে একইভাবে টেস্ট টিউবে মা হওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এবার তাঁর গর্ভে আসে যমজ সন্তান। কিন্তু, অন্তঃস্বত্তার ১৭ সপ্তাহে জুলাই মাসের ১১ তারিখ রক্তক্ষরণ নিয়ে তিনি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। ১২ তারিখ একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন তিনি।
পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ায় গর্ভে দ্বিতীয় সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়েন চিকিৎসকরা। টানা ১২৫ দিন হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন তিনি। কঠোর পর্যবেক্ষণে রাখা হয় মা ও শিশুটিকে। এরপর ১২৬ দিনের মাথায়, মঙ্গলবার তিনি যমজ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন। শিশুটির ওজন হয় ২ কেজী ৯০৬ গ্রাম। মা, সন্তান দুজনেই সুস্থ রয়েছে বলে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
মেডিক্যালের গাইনি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মলয় সরকারের দাবি, জরায়ুতে একটি শিশুর মৃত্যু হয়। তারপর অন্য আর একটি শিশুর জন্ম দেওয়াটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। কারণ, এই সময়ে সংক্রমণের ব্যাপক ভয় থাকে। এছাড়াও শিশুটির পরিনত হতেও সময়ও লাগে। তাই এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এখানেই অসাধ্যসাধন করেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বোর্ডের দাবি, ১৯৭৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর শহরে এই ধরণের একটি ঘটনায় ৯০ দিন পর দ্বিতীয় শিশুটিকে সফলভাবে প্রসব করানো হয়। এই ঘটনা গিনেস বুক অফ রেকর্ডস-এ আছে। বর্ধমান মেডিক্যালে তাঁরা ১২৫ দিনের পর প্রসব করিয়েছেন। তাদের ধারণা পূর্বের সাফল্য এবং রেকর্ড ছাপিয়ে গেছেন তাঁরা। ইভিএম নিউজ