ইভিএম নিউজ ব্যুরো: পুঁজিপতি গৌতম আদানির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, এ কথা প্রমাণ করতে সংসদে মঙ্গলবার নিজের বক্তব্য পেশ করার সময় একটি ছবি সামনে এনেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি। আদানিকাণ্ড নিয়ে বক্তব্য পেশ করার সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক’ হয়ে উঠেছিলেন। এর জেরেই রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়রা জন্য লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তাঁর অভিযোগ, “রাহুলের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর, অশালীন এবং অবমাননাকর।”
এছাড়াও রাহুলের বিরুদ্ধে সংসদীয় রীতি-নীতি ও নিয়ম লঙ্ঘন করার অভিযোগও করেছেন নিশিকান্ত। তাঁর দাবি, কোনোরকম বৈধ প্রমাণ ছাড়াই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তাঁর সম্মানহানি করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। রাহুলের আচরণ লোকসভার জন্য অবমাননাকর এবং লোকসভার সদস্যদের অধিকার লঙ্ঘনে শামিল, এই অভিযোগ করে কংগ্রেসের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ সাংসদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য লোকসভার অধ্যক্ষকে আর্জি জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ।
নিশিকান্ত তাঁর চিঠিতে ঠিক কী লিখেছেন? তিনি লিখেছেন, ‘‘লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণে ধন্যবাদ প্রস্তাবের বিতর্কে অংশ নেওয়ার সময় রাহুল আগাম নোটিস না দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু অপ্রমাণিত, অপরাধমূলক এবং মানহানিকর বিবৃতি দিয়েছিলেন। এই বিবৃতিগুলি বিভ্রান্তিকর, অবমাননাকর, অশ্লীল, অসংসদীয়, অসম্মানজনক এবং সংসদের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করে। রাহুল তাঁর বিবৃতি সমর্থন করার জন্য কোনো যথাযথ নথি জমা দেননি। তিনি কেবল একটি বিবৃতি দিয়েছেন। যা সংসদকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই না।’’
সংসদে আদানিকাণ্ড নিয়ে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য ‘বিভ্রান্তিকর, অবমাননাকর এবং অশালীন’। মন্তব্য করে কংগ্রেস সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানালেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে একটি চিঠিও লিখেছেন নিশিকান্ত। সেই চিঠিতে তিনি কংগ্রেস সাংসদের বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে উল্লেখ করেছেন, রাহুল লোকসভায় বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করেছেন এবং কোনও বৈধ প্রমাণ ছাড়াই মোদীর বিরুদ্ধে পুঁজিবাদের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ এনেছেন।
নিশিকান্ত চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণে ধন্যবাদ প্রস্তাবের বিতর্কে অংশ নেওয়ার সময় রাহুল আগাম নোটিস না দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু অপ্রমাণিত, অপরাধমূলক এবং মানহানিকর বিবৃতি দিয়েছিলেন। এই বিবৃতিগুলি বিভ্রান্তিকর, অবমাননাকর, অশ্লীল, অসংসদীয়, অসম্মানজনক এবং সংসদের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করে।’’
তিনি যোগ করেন, “রাহুল তাঁর বিবৃতি সমর্থন করার জন্য কোনও যথাযথ নথি জমা দেননি। তিনি কেবল একটি বিবৃতি দিয়েছেন। যা সংসদকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই না।’’
চিঠিতে রাহুলের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আবেদনও করেছেন নিশিকান্ত। তিনি লিখেছেন, ‘‘রাহুলের আচরণ লোকসভা এবং এর সদস্যদের বিশেষ অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। একই সঙ্গে তা নিম্নকক্ষের জন্যও অবমাননাকর। আমি আপনাকে (ওম বিড়লা) সংসদ অবমাননার জন্য অবিলম্বে রাহুলের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’’
প্রসঙ্গত, মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তাদের একটি রিপোর্টে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে ব্যাপক কারচুপি করার অভিযোগ করেছে। যা নিয়ে ভারতীয় রাজনীতি ছাড়াও তোলপাড় বিশ্ব অর্থনীতি। এই ব্যাপারে মঙ্গলবার সংসদে বক্তব্য রাখতে রাহুল গান্ধি বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় আদানিদের সঙ্গে সম্পর্কের শুরু এক জনই কাঁধে কাঁধ রেখে প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। উনি (গৌতম) মোদীর অনুগত থেকেছেন। এবং নতুন করে গুজরাতকে সাজানোর ভাবনা মোদীর মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছেন।’’ প্রধানমন্ত্রীত্বের সুযোগে মোদি কীভাবে আদানিকে নানাক্ষেত্রে সুবিধা করে দিয়েছেন, তাও তুলে ধরেন রাহুল। এর পরেই বিজেপি শিবির তাঁর বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়ে। রাহুলের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ অবমাননার অভিযোগ করেন নিশিকান্ত দুবে। যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, এর আগে সংসদে কী ভাষা ব্যবহার করা যাবে, আর কী কী বলা যাবে না, তা নিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই বিষয়টিকে মান্য করা হয়, তা হলে সেই নির্দেশনামা অনুযায়ী আদৌ রাহুল গান্ধির বক্তব্য সংসদের জন্য অবমাননাকর কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এখন দেখার লোকসভার অধ্যক্ষ এই ব্যাপারে কী পদক্ষেপ করেন।