তাঁর সরকারের শিক্ষাব্যবস্থা পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির কাছে নতজানু। নেতা-মন্ত্রীর থেকে শুরু করে শিক্ষাব্যবস্থার মাথারা প্রায় সকলেই জেলে। দলের প্রথম থেকে শুরু করে দ্বিতীয় এমনকি ‘হাফ নেতারা’ও এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের নজরে। খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা। দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে গিয়ে তল পাচ্ছেন না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
আবার জাতীয় স্তরে শিক্ষায় গৈরিকীকরণের অভিযোগ ছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। বিভিন্ন ইস্যুতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও কেন্দ্রের নীতির সমালচনা করতে পিছপা হননি। শুধু তাই নয় কিছুদিন আগে এই নোবেলজয়ী মন্তব্য করেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা আছে কিন্তু দেখতে হবে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশকে একই সুরে গাঁথতে পারেন কিনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারই পরিণতিতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে দখল করে রাখা বাড়তি জমি ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ পাঠায়।
একদিকে যখন বিজেপির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, অন্যদিকে রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা চূড়ান্ত কালিমালিপ্ত হয়েছে শিক্ষক নিয়োগ কাণ্ডে। নিত্যনতুন শিক্ষা দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসছে। কোটি কোটি টাকা শাসক দলের নেতা-মন্ত্রী, কর্মীর পকেটে গিয়েছে, এমনটাই অভিযোগ।এই অবস্থায় দলের ও সরকারের ভাবমূর্তিকে সাফসুতরো করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বভারতী ও অমর্ত্য সেনের মধ্যে চলতে থাকা জমি ইস্যুতে খুল্লাম খুল্লা নোবেলজয়ীর পাশে দাঁড়িয়েছেন।
সোমবার বীরভূম জেলা সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সোজা চলে যান শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের প্রতীচীর বাড়িতে। সেইখানেই তিনি সরকারের হাতে থাকা বাড়িটির জমির দলিলের প্রতিলিপি তুলে দেন নোবেলজয়ীর হাতে। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, সরকারের হাতে থাকা এই দলিলটিই সঠিক, অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর কোনও বাড়তি জমি দখল করে রাখেননি। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী বোলপুরে পৌঁছানোর আগেই বোলপুরের বিএলআরও অমর্ত্য সেনের বাড়িতে যান।
শুধু জমির নথিপ্রদানই নয়, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন নোবেলজয়ীর জন্য সশস্ত্র দেহরক্ষী ও বাড়ির সামনে পুলিশ প্রহরা। শিক্ষাসহ বিভিন্ন দুর্নীতিতে জেরবার শাসকদলের কাছে অমর্ত্য ও বিশ্বভারতীর মধ্যেকার জমি ইস্যুতে নাক গলানো ছাড়া আর কোনও রাস্তা খোলা ছিলনা বলেই বিরোধী দলের দাবি।