ব্যুরো নিউজ ১০ এপ্রিল: পশ্চিমবঙ্গের একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ওয়াকফ সম্পত্তি জবরদখলের অভিযোগ উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক বিস্তারিত রিপোর্টে। সংসদে ওয়াকফ বিল নিয়ে আলোচনার আগেই এই রিপোর্টটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। রিপোর্টে মোট চারজন তৃণমূল নেতা-নেত্রীর নাম রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, এক রাজ্যসভার সাংসদ, এক কাউন্সিলর এবং এক প্রয়াত বিধায়ক।
২০২৫ এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপে বড় সুযোগ ভারতীয় শাটলারদের, তবে বড় চ্যালেঞ্জও
বিস্তারিত অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা
রিপোর্ট অনুযায়ী, নদিয়ার কালীগঞ্জের প্রয়াত বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ সাহেবুল্লাহ ওয়াকফ এস্টেটের ৩,০০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট জবরদখল করেছিলেন। অন্যদিকে, রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হক তালবাগান রোডে ওয়াকফের ২২ কাঠা জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধেও বড় অভিযোগ উঠেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, জোহুরা বিবি ওয়াকফ এস্টেটের ৩৫ বিঘা জমির মধ্যে পাঁচ বিঘা জমি ফিরহাদ ও তাঁর স্ত্রী যৌথভাবে দখল করেছেন এবং সেখানে একটি মার্বেল শোরুম পরিচালনা করছেন।
Today petrol price: আজ পেট্রল ও ডিজেলের দাম কোন রাজ্যে কত থাকছে এক নজরে জেনে নিন
পুরসভার ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাম্মি জাহান বেগমের বিরুদ্ধেও অভিযোগ, তিনি হাজরা রোডের টিপু সুলতান গোরস্থানে ওয়াকফ জমি দখল করে রেখেছেন, যদিও জমির পরিমাণ বা ব্যবহার সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য রিপোর্টে নেই। একই সঙ্গে, বাম জমানায় জমা পড়া পুলিশের কাছে জমা থাকা তিনটি অভিযোগকেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ফিরহাদ হাকিম ও এক প্রোমোটার মিলে জোহরা বেগম ওয়াকফ এস্টেটে বেআইনি নির্মাণ করেছেন। সেই নির্মাণ বন্ধে বহুবার পুলিশকে চিঠি দেওয়া হলেও কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ভারতের জিনোম ডেটাবেস: নতুন শাস্ত্রে কি উন্মোচিত হতে যাচ্ছে অজানা সত্য?
এছাড়াও, নবাব ওয়াজিদ আলি শাহের দান করা মেটিয়াবুরুজের ওয়াকফ সম্পত্তি একটি হাসপাতাল ট্রাস্টকে সাব-লিজ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম এবং নিয়ম না মেনে বোর্ড একদিনেই সেই সাব-লিজ অনুমোদন করেছে। এই সব অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি দাবি করেন, “এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।” তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ধরনের রিপোর্ট তৈরি করে তাঁকে এবং তৃণমূল নেতাদের হেনস্থা করতে চাইছে। একইভাবে কাউন্সিলর শাম্মি জাহানও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, “আমি ওয়াকফ বোর্ডের সদস্যই নই। কোথায় ওয়াকফ সম্পত্তি আছে, তাও জানি না।” অন্যদিকে, রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হকের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বিরোধীরা যেখানে এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছেন, তৃণমূল নেতৃত্ব একে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলেই ব্যাখ্যা করছেন।