ব্যুরো নিউজ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : দেশের ১৫তম উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে NDA প্রার্থী সি পি রাধাকৃষ্ণনের জয়ের পর নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। নির্বাচনে ১৫টি ভোট বাতিল হওয়া এবং বিরোধী শিবিরের পক্ষ থেকে ক্রস-ভোটিংয়ের অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় চলছে।
১৫টি ভোট বাতিল, বিরোধীদের মধ্যে অসন্তোষ
নির্বাচনে মোট ৭৬৭ জন সংসদ সদস্য ভোট দিয়েছেন, যার মধ্যে ১৫টি ভোট বাতিল বলে গণ্য করা হয়েছে। সূত্র অনুসারে, বিরোধী জোট ‘ইন্ডি’র ১০টিরও বেশি ভোট বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে আম আদমি পার্টি (AAP)-এর ৩টি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (RJD)-এর ২টি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (JMM)-এর ১টি এবং উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে-নেতৃত্বাধীন শিবসেনা (UBT)-এর ২টি ভোট বাতিল বলে জানা গেছে। এই ঘটনা বিরোধী শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলেছে।
বিজেপি’র ক্রস-ভোটিংকে স্বাগত
বিজেপি এই ঘটনায় বিরোধী জোটের ক্রস-ভোটিংয় কে স্বাগত জানিয়েছে । সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বিরোধী জোটের কিছু “বন্ধুত্বপূর্ণ সাংসদ”-কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, যারা ‘সচেতনভাবে’ NDA প্রার্থী সি পি রাধাকৃষ্ণনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। প্রবীণ বিজেপি নেতা বি এল সন্তোষও এই অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে জানান, ‘ইন্ডি’ জোটের প্রার্থী বি সুদর্শন রেড্ডি তাঁদের মোট সাংসদের সংখ্যা (৩২৪) থেকে ১৫টি কম ভোট পেয়েছেন। সন্তোষ এক্স (পূর্বে টুইটার) পোস্টে লেখেন, “ইন্ডি জোটের নেতারা সচেতনভাবে ভোট দেওয়ার জন্য প্রচার চালিয়েছিলেন। তারই ফলস্বরূপ তারা এর প্রতিদান পেয়েছে।”
তদন্তের দাবি কংগ্রেসের
এদিকে, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ প্রথমে দাবি করেছিলেন যে বিরোধী জোটের সব ৩১৫ জন সাংসদই ভোট দিয়েছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ১৫টি ভোট বাতিল হওয়ায় সেই দাবি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তিওয়ারি ক্রস-ভোটিংয়ের অভিযোগের বিষয়ে গভীর তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যদি ক্রস-ভোটিংয়ের অভিযোগের সামান্যতম সত্যতাও থাকে, তবে প্রতিটি বিরোধী দলকে নিজেদের উদ্যোগে এর ‘ক্লিনিক্যাল’ তদন্ত করা উচিত।
বিরোধী শিবিরের ভোট সমীকরণ
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য মোট ভোটার সংখ্যা ৭৮১ জন (রাজ্যসভার ৬টি এবং লোকসভার ১টি আসন খালি থাকায়)। এর মধ্যে NDA শিবিরের ৪২৫ জন এবং বিরোধী শিবিরের ৩২৪ জন সাংসদ রয়েছেন। এছাড়া, বিজু জনতা দল (BJD), ভারত রাষ্ট্র সমিতি (BRS) এবং শিরোমণি আকালি দল (SAD)-এর ১৪ জন সাংসদ ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন। সমস্ত সাংসদ ভোট দিলে রেড্ডির ৩২৪ ভোট পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তিনি পেয়েছেন মাত্র ৩০০ ভোট। এই ব্যবধানই ক্রস-ভোটিংয়ের অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে।