ব্যুরো নিউজ ২৮ মে : ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার আবহে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বুধবার (২৮ মে, ২০২৫) আন্তঃ-পরিষেবা সংস্থা (কমান্ড, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা) আইন ২০২৩-এর অধীনে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। এই নির্দেশিকা সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বৃহত্তর সমন্বয় (জয়েন্টনেস) এবং কমান্ডের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, আন্তঃ-পরিষেবা সংস্থা (কমান্ড, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা) আইন ২০২৩-এর অধীনে প্রণীত এই নিয়মগুলি একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জারি করা হয়েছে এবং ২৭ মে থেকে কার্যকর হবে। এই পদক্ষেপটি আন্তঃ-পরিষেবা সংস্থাগুলির (ISOs) কার্যকর কমান্ড, নিয়ন্ত্রণ এবং দক্ষ কার্যকারিতা বাড়াবে, যার ফলে সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় আরও জোরদার হবে।
কেন এই অভিন্ন কমান্ড?
ভারতীয় সামরিক বাহিনীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা ছিল সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীকে একটি একক, সমন্বিত কমান্ড কাঠামোর অধীনে নিয়ে আসা। ঐতিহাসিকভাবে, প্রতিটি বাহিনী তাদের নিজস্ব কমান্ডের অধীনে কাজ করে, যা কখনও কখনও সম্পদ বন্টন এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে। যৌথ থিয়েটার কমান্ডের ধারণাটি এই সমস্যার সমাধান করতে চায়। এর লক্ষ্য হল একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকার (যেমন পশ্চিম বা পূর্ব থিয়েটার) মধ্যে স্থল, সমুদ্র এবং বিমান অপারেশন সহ সমস্ত সামরিক সম্পদকে একজন একক, যৌথ কমান্ডারের অধীনে আনা। এটি আধুনিক যুদ্ধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে দ্রুত এবং সমন্বিত প্রতিক্রিয়া অপরিহার্য।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে
নতুন আইনের পটভূমি ও উদ্দেশ্য
এই আইনটি ২০২৩ সালের বর্ষাকালীন অধিবেশনে সংসদের উভয় কক্ষে পাস হয়েছিল এবং ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে। এরপর ৮ মে, ২০২৪ তারিখে গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আইনটি ১০ মে, ২০২৪ থেকে কার্যকর হয়। এই আইনটি আন্তঃ-পরিষেবা সংস্থাগুলির কমান্ডার-ইন-চিফ এবং অফিসার-ইন-কমান্ডদের তাদের অধীনে কর্মরত সার্ভিস কর্মীদের উপর কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করার ক্ষমতা দেয়। এর ফলে সংস্থাগুলির মধ্যে শৃঙ্খলা ও প্রশাসন কার্যকরভাবে বজায় রাখা নিশ্চিত হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি শাখার জন্য প্রযোজ্য নির্দিষ্ট পরিষেবার শর্তাবলী পরিবর্তন না করেই অর্জন করা হবে।
সুবিধা ও ভবিষ্যৎ দিক
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নতুন নির্দেশিকাগুলি সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর প্রধান সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে:
- বর্ধিত সমন্বয়: সমস্ত পরিষেবার মধ্যে উন্নত সমন্বয় এবং হুমকির প্রতি unified প্রতিক্রিয়া।
- দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ: কমান্ডের একক পয়েন্ট পরিষেবা প্রধানদের মধ্যে যোগাযোগের স্তরগুলিকে সরিয়ে দেয়, যার ফলে দ্রুত অপারেশনাল সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
- সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার: পরিষেবাগুলির মধ্যে প্রচেষ্টা এবং সম্পদের অনুলিপি এড়ানো যায়, যা বৃহত্তর দক্ষতার দিকে নিয়ে যায়।
- আধুনিক যুদ্ধের প্রস্তুতি: আধুনিক সংঘাতের জন্য ভূমি, সমুদ্র, আকাশ, স্থান এবং সাইবার ডোমেন জুড়ে seamless একীকরণ প্রয়োজন, যার জন্য একটি যৌথ কমান্ড কাঠামো অপরিহার্য।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এই পদক্ষেপ ভারতের সামরিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী এবং আধুনিক করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে, বিশেষত বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে।