ব্যুরো নিউজ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : আজ, বুধবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৭৫তম জন্মদিন। এই বিশেষ দিনে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিশিষ্টজনেরা তাঁকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে শুরু করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু পর্যন্ত, সকলে ভারতের অগ্রগতি এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।
ট্রাম্পের ফোনকল এবং ভারত-মার্কিন সম্পর্কের পুনর্গঠন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের প্রাক্কালে তাঁকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানান। এই ফোনকলকে দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক কিছু টানাপোড়েনের পর সম্পর্ক পুনর্গঠনের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প ফোনকলে মোদীকে ‘আমার বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন এবং জানান যে তিনি “অসাধারণ কাজ” করছেন। তিনি বলেন, “আমার বন্ধু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একটি চমৎকার টেলিফোন কথোপকথন হয়েছে। আমি তাঁকে শুভ জন্মদিন জানালাম! তিনি অসাধারণ কাজ করছেন।”
এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী মোদীও সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’-এ ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, “আপনার মতোই, আমি ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক এবং বৈশ্বিক অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তিনি ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে ট্রাম্পের উদ্যোগকে সমর্থন জানানোর কথাও উল্লেখ করেন।
অন্যান্য বিশ্বনেতাদের শুভেচ্ছা
মার্কিন প্রেসিডেন্টের পর অন্যান্য বিশ্বনেতারাও প্রধানমন্ত্রী মোদীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন:
- ভ্লাদিমির পুতিন (রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি): পুতিন তাঁর বার্তায় বলেন, ভারতের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে মোদীর নেতৃত্বে যে অগ্রগতি হয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তিনি ভারত-রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করার আশা প্রকাশ করেন।
- বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী): নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী, আমার ভালো বন্ধু নরেন্দ্র, আমি আপনাকে শুভ জন্মদিন জানাতে চাই। আপনি আপনার জীবনে ভারতের জন্য অনেক কিছু করেছেন।” তিনি ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্ধুত্বকে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশাও প্রকাশ করেন।
- রিশি সুনাক (যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী): সুনাক মোদীকে “আমার এবং ব্রিটেনের একজন ভালো বন্ধু” বলে অভিহিত করেন। তিনি ভারত ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী হতে দেখে আনন্দ প্রকাশ করেন এবং বলেন, এই অনিশ্চিত সময়ে সকলেরই একজন ভালো বন্ধুর প্রয়োজন।
- জর্জিয়া মেলোনি (ইতালির প্রধানমন্ত্রী): মেলোনি এক্স-এ মোদীর সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, “ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে ৭৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা। তাঁর শক্তি, সংকল্প এবং লক্ষ লক্ষ মানুষকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা অনুপ্রেরণার উৎস।”
- শেরিং তোবগে (ভুটানের প্রধানমন্ত্রী): তোবগে তাঁর শুভেচ্ছা বার্তায় ভুটানের পক্ষ থেকে মোদীর সুস্বাস্থ্য, সুখ এবং দীর্ঘ জীবনের জন্য প্রার্থনা করেন।
- ক্রিস্টোফার লুকসন (নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী): লুকসন মোদীর নেতৃত্ব এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার তার দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেন।
- অ্যান্টনি আলবানিজ (অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী): আলবানিজ মোদীকে “বন্ধু” হিসেবে অভিহিত করেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয় সম্প্রদায়ের “অবিশ্বাস্য অবদানের” প্রশংসা করেন।
- নবীচন্দ্র রামগুলাম (মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী): রামগুলাম মোদীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বলেন যে, তিনি যেভাবে দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তা প্রশংসার যোগ্য।
উপসংহার
ডোনাল্ড ট্রাম্পই ছিলেন সমস্ত নেতাদের মধ্যে প্রথম যিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর জন্মদিনের প্রাক্কালে ফোন করেন। এর মাধ্যমে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে নেওয়া কিছু কঠোর সিদ্ধান্তের পর মোদীর সঙ্গে তার সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের সুযোগটি কাজে লাগান । এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবশ্যই ‘ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের’ মাধ্যমে কৌশলগত সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছেন, যা একটি ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ কৌশল।