ব্যুরো নিউজ ,৩ মে: সাপের কামড়ের চিকিৎসায় সাধারণত যে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়, তা তৈরি করা হয় ঘোড়ার রক্ত থেকে। কিন্তু এবার প্রথমবারের মতো মানুষের রক্ত থেকেই তৈরি হচ্ছে এই জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশন। আর এই ইতিহাসের নায়ক হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা টম ফ্রিড।
সাপের কামড়ের চিকিৎসায় একটি বড় বিপ্লব
টম ফ্রিডের জীবনের গল্প সিনেমার থেকেও চমকপ্রদ। তিনি গত ১৮ বছর ধরে ইচ্ছাকৃতভাবে সাপের কামড় খেয়ে যাচ্ছেন। ২০০১ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০০ বার বিষধর সাপের কামড় খেয়েছেন তিনি। এর ফলে তার শরীরে একটি স্বাভাবিক ও শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা যায় না।
শিলিগুড়ি সেনা ছাউনির সামনে সন্দেহভাজন আফগান যুবক ধরা পড়ল, তদন্তে তোলপাড় প্রশাসন
বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর সাপগুলির কামড়ও টমের শরীর হার মানিয়েছে। এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ফলে তার রক্তে এমন অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, যা গবেষকদের নজর কেড়েছে। সিএনএনের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, বিজ্ঞানীরা টমের রক্ত থেকে এই বিশেষ অ্যান্টিবডিগুলি সংগ্রহ করে একটি নতুন ধরনের অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন তৈরি করেছেন।
পরীক্ষামূলকভাবে এই ইনজেকশন বিভিন্ন সাপের কামড় খাওয়া প্রাণীর উপর প্রয়োগ করা হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই প্রাণীগুলি বেঁচে গিয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে টমের রক্ত থেকে তৈরি অ্যান্টিভেনম কার্যকর এবং শক্তিশালী।
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করল নয়াদিল্লি !ইসলামাবাদ কতটা ধাক্কা খেল?
এখন পর্যন্ত প্রচলিত পদ্ধতিতে অ্যান্টিভেনম তৈরি করতে ঘোড়ার শরীরে সামান্য পরিমাণ বিষ প্রবেশ করানো হয়। এর ফলে ঘোড়ার দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা সংগ্রহ করে ইনজেকশনে রূপান্তর করা হয়। তবে এই পদ্ধতিতে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকে, কারণ এটি প্রাণীদের উপর নির্ভরশীল এবং কিছু মানুষের শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
টম ফ্রিডের রক্ত থেকে তৈরি অ্যান্টিভেনম মানব শরীরের সঙ্গে অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা আশা করছেন, এই গবেষণা সফল হলে ভবিষ্যতে সাপের কামড়ের চিকিৎসায় একটি বড় বিপ্লব আসবে। মানুষের রক্ত থেকে তৈরি এই অ্যান্টিভেনম আরও নিরাপদ, দ্রুত কার্যকর এবং সবার জন্য সহজলভ্য হবে।
সিন্ধুর জল নিয়ে দ্বন্দ্ব চরমে, ‘ভারত বাঁধ বানালে ভেঙে দেব’ হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের
টম নিজেও জানিয়েছেন, তিনি চাইছেন তার এই ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা যেন মানবজাতির কল্যাণে কাজে লাগে। সারা জীবন ধরে সাপের কামড় সহ্য করলেও তিনি জানতেন, একদিন এই ক্ষমতা বিশ্বকে নতুন পথ দেখাবে।
বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা ইতিমধ্যেই এই গবেষণার ফলাফল নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, কবে এই মানব-অ্যান্টিভেনম সাধারণ মানুষের জন্য বাজারে আসবে।