ব্যুরো নিউজ ২৮ মে : পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানা এলাকায় এক প্রবীণ দম্পতির নলিকাটা দেহ বস্তাবন্দী অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বুধবার সকালে তাঁদের বাড়ির সামনে থেকেই এই মর্মান্তিক দৃশ্য স্থানীয়দের নজরে আসে, যা মুহূর্তে পুলিশে খবর দেওয়া হলে তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তে এটিকে নৃশংস হত্যাকাণ্ড বলেই মনে করছে পুলিশ।

মৃতদেহ উদ্ধার ও চাঞ্চল্য স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে মেমারি এলাকার একটি রাস্তায় চলাচলকারী কিছু মানুষ একটি সন্দেহজনক বস্তা দেখতে পান। কৌতূহলবশত এবং কিছুটা সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা বস্তাটি খোলেন। বস্তা খুলতেই ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে দুটি মৃতদেহ – যা দেখে উপস্থিত সকলেরই হাড়হিম হয়ে যায়। দেখা যায়, প্রবীণ দম্পতির গলার নলি কাটা এবং দেহ রক্তে ভেজা। এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখার পর মুহূর্তেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে মেমারি থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে

মৃত দম্পতির পরিচয় ও নিখোঁজ পুত্র পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত বৃদ্ধের নাম মুস্তাফিজুর রহমান (৬৬) এবং প্রৌঢ়া মমতাজ পারভিন (৫৬)। এই দম্পতি মেমারিতেই বসবাস করতেন। এই ঘটনায় আরও রহস্য ঘনীভূত হয়েছে কারণ, এই দম্পতির ছেলে আসিফ ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ বর্তমানে আসিফের খোঁজ চালাচ্ছে এবং তার সম্ভাব্য ভূমিকা খতিয়ে দেখছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা ঘরের ভিতরেই এই দম্পতিকে নৃশংসভাবে খুন করেছে এবং প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে মৃতদেহ দুটি বস্তাবন্দী করে বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে দিয়েছে।

তদন্তের গতিপথ ও পুলিশের অনুমান ঘটনার খবর পেয়েই পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ফরেনসিক দল এবং ডগ স্কোয়াডও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক বিবাদ বা সম্পত্তি সংক্রান্ত কোনো বিবাদ এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকতে পারে। তবে, অন্য কোনো কারণ বা ব্যক্তিগত আক্রোশ জড়িত আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন নিখোঁজ ছেলে আসিফের ভূমিকা। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আসিফ তার বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকত। এই ধরণের হত্যাকাণ্ডের পর পরিবারের সদস্যের নিখোঁজ থাকা প্রায়শই তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে ওঠে। পুলিশ আসিফকে খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন সম্ভাব্য স্থানে তল্লাশি চালাচ্ছে এবং তার মোবাইল ফোনের শেষ অবস্থান জানার চেষ্টা করছে। পুলিশের ধারণা, আসিফকে খুঁজে বের করতে পারলেই এই জোড়া খুনের রহস্যের জট খুলতে পারে।

কলকাতায় তিরঙ্গা যাত্রা ,বিএসএফ জওয়ান মুক্তি, ভুয়ো খবর দমন, সন্ত্রাসবাদ নিপাতন : মোদীর নেতৃত্বে দেশ সুরক্ষিত দাবি শুভেন্দু অধিকারীর

এলাকায় আতঙ্ক ও জনমনে প্রশ্ন মেমারির মতো শান্ত এলাকায় এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকার মানুষজন এই ঘটনার পর নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, দিনের আলোয় যদি এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে রাতে তাদের নিরাপত্তা কোথায়? স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ স্থানীয়দের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে এবং দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে।

প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ফরেনসিক বিশ্লেষণের ফলাফলের জন্য পুলিশ অপেক্ষা করছে, যা তদন্তের পরবর্তী ধাপ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর