ব্যুরো নিউজ ১১ আগস্ট ২০২৫ : কলকাতা হাইকোর্টে ৩২ হাজার অপ্রশিক্ষিত প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল সংক্রান্ত মামলাটি আজ এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কিত এই মামলার পরবর্তী শুনানি আজ, ১১ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। এই মামলার রায়ের ওপর হাজার হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে, তাই সকলের চোখ এখন আদালতের দিকে।
মামলার বিস্তারিত
মামলাটি “West Bengal Board of Primary Education vs. Priyanka Naskar” নামে পরিচিত এবং এর MAT নম্বর হলো ৮৭৩ of ২০২৩। এই মূল মামলার সঙ্গে ১০২টি অন্যান্য সম্পর্কিত আবেদন (CAN) যুক্ত আছে, যা এই বিষয়টির জটিলতা এবং ব্যাপকতা তুলে ধরে। মামলাটির শুনানি করছেন বিচারপতি তব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মৈত্র-এর ডিভিশন বেঞ্চ।এই মামলাটি ২০২২ সালের নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে যে অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছিল।
আইনি যুক্তি ও বিতর্ক
আদালতে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা তাঁদের যুক্তি তুলে ধরেছেন। আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী তরুণজ্যোতি তেওয়ারি, বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, সৌম্য মজুমদার, বিক্রমজিত দত্ত এবং কুমার জ্যোতি দৃষ্টান্তমূলক যুক্তি পেশ করেছেন। অন্যদিকে, শিক্ষকদের পক্ষে অনিন্দ্য লাহিড়ী এবং অন্যান্য আইনজীবীরা তাঁদের বক্তব্য পেশ করবেন।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হল আইনজীবী শাক্য সেনের যুক্তি, যিনি ইতিমধ্যেই তাঁর সওয়াল শেষ করেছেন। তিনি মূলত ২৬৯ জনের নিয়োগকে ৩২ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে পৃথক করার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তাঁর প্রধান যুক্তিগুলি হলো:
- অতিরিক্ত নম্বর প্রদান: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর ২৬৯ জন প্রার্থীকে অবৈধভাবে অতিরিক্ত এক নম্বর দেওয়া হয়েছিল এবং এই নিয়োগটি ৩২ হাজার শিক্ষকের নিয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
- অ্যাটিটিউড টেস্ট: তিনি অ্যাপটিটিউড টেস্টে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগও তুলেছেন, তবে তিনি বলেছেন যে এটি ৩২ হাজার শিক্ষকের নিয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
সেক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে , যে অ্যাপটিটিউড টেস্টের অনিয়ম কি প্রভাবিত করছেনা ৩২ হাজার শিক্ষকের নিয়োগকে ? অ্যাপটিটিউড টেস্ট কি TET টেট নিয়োগ প্রণালীর অংশ নয় ?
CPM support TMC : ভোটব্যাঙ্কের জন্য ‘বাংলাদেশিদের’ রক্ষা করায় তৃণমূলের পাশে বামফ্রন্ট, পাল্টা আক্রমণে বিজেপি
পরবর্তী শুনানি ও সম্ভাব্য রায়
মামলার পরবর্তী শুনানি আজ সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫-এর ২টোয় কোর্ট নম্বর ১১-তে শুরু হবে।
আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, মামলাটি এখন তার চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে এগোচ্ছে এবং আর কয়েকটি শুনানির পরেই বিচারকরা রায় সংরক্ষিত রাখতে পারেন। এই মামলার রায় কেবল ৩২ হাজার শিক্ষকের ভাগ্য নির্ধারণ করবে না, বরং পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতি ও স্বচ্ছতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। সকলের আশা, আদালত একটি ন্যায্য ও সঠিক রায় দেবে যা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করবে।