ব্যুরো নিউজ ,৬ মে: বিয়ের আনন্দ এক নিমিষেই দুঃস্বপ্নে বদলে গেছে নবদম্পতি স্বাতীলেখা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনে। ভয়, আতঙ্ক আর পালিয়ে বেড়ানো এখন তাদের নিত্যসঙ্গী। ব্যারাকপুরের স্বাতীলেখা আর দুর্গাপুরের সুমিত নতুন সংসার সাজানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নের অঙ্গ হিসেবে বেহালার এক ইন্টিরিয়র ডেকরেশন সংস্থাকে অন্দরসজ্জার দায়িত্ব দেন তারা। সংস্থার কর্ণধার শিবাজি সিং-এর হাতে আগাম ১ লক্ষ টাকার চেকও তুলে দেন।
কলকাতা কাঁপল সাতসকালে!এনআরআই কোটায় মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি কেলেঙ্কারি ঘিরে ইডির হানা একাধিক স্থানে
দুষ্কৃতীরা আসছে লাল বাতির গাড়িতে
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, স্বাতীলেখা বা সুমিতের মায়ের আকস্মিক অসুস্থতায় ২২ ফেব্রুয়ারির নির্ধারিত বিয়ে স্থগিত করতে হয়। পরিস্থিতির চাপে তাঁরা শিবাজি সিংকে কাজ বাতিল করে চেক ফেরত চাইলে শুরু হয় জটিলতা। অভিযোগ অনুযায়ী, শিবাজি সিং টাকা ফেরত তো দেনইনি, উল্টে শুরু করেন লাগাতার হুমকি। শুধু মৌখিক নয়, প্রাণনাশের হুমকি, আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে ভয় দেখানো, এমনকি তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
এখানেই শেষ নয়। স্বাতীলেখা ও সুমিতের দাবি, দুষ্কৃতীরা লাল বাতির গাড়িতে সিবিআই অফিসারের ভুয়ো পরিচয় দেখিয়ে তাদের ভয় দেখাতে আসে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝেই তারা গত ১৮ এপ্রিল এক মন্দিরে বিয়ে সারেন। তবে হুমকি-আতঙ্কের ছায়া থেকে মুক্তি মেলেনি।দুজনেই পুলিশের দ্বারস্থ হন। কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ জানালেও তাদের বরং সমঝোতা করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। নবদম্পতির প্রশ্ন, যখন তারা সংস্থার কাছ থেকে কোনও পরিষেবাই নেননি, তখন কেন তাদের টাকা দিতে হবে? আর কেনই বা এই চরম হুমকির শিকার হতে হবে?
১৯৭১ সালের পর প্রথম: সারা দেশে অসামরিক মহড়া, বাংলার ৩১ এলাকাতেও প্রস্তুতি চূড়ান্ত
পুলিশের সহযোগিতা না পেয়ে বাধ্য হয়ে আত্মগোপনেই নিরাপত্তা খুঁজছেন নবদম্পতি। কখনও দিঘা, তো কখনও তারাপীঠ—জায়গা বদলে নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা করছেন তারা। অথচ নতুন জীবনের শুরুতে এমন আতঙ্ক তাদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।এই ঘটনা সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। যেখানে থানায় অভিযোগ করেও সুরক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে সাধারণ নাগরিক কতটা নিরাপদ? স্বাতীলেখা-সুমিতের এই লড়াই এখন শুধু তাদের নয়, নিরাপত্তার দাবিতে বড় এক প্রশ্নচিহ্ন।
