ব্যুরো নিউজ ২৬ জুন: মুম্বইয়ের এক বহুতল আবাসনে ঘটে গেল এক নৃশংস ঘটনা। ১৭ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু হল এক পথ কুকুরের। অভিযোগের তীর আবাসনের নিরাপত্তা কর্মীর দিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ওই নিরাপত্তা কর্মী কুকুরটিকে নির্মমভাবে মারধর করছেন, যার ফলে কুকুরটি প্রাণ বাঁচাতে উঁচু বারান্দা থেকে লাফিয়ে পড়ে। এই ঘটনায় নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, এক রাস্তার কুকুর বিনা অনুমতিতে মুম্বইয়ের ওই আবাসনে প্রবেশ করে। এই ‘অপরাধে’ নিরাপত্তা কর্মী তাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। নিজেকে বাঁচাতে দিশাহারা কুকুরটি একসময় ১৭ তলার বারান্দা থেকে ঝাঁপ দেয়। এরপর আবাসনের নিচে তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, আবাসনের এক বাসিন্দা প্রথমে কুকুরটিকে ১৭ তলায় দেখতে পান এবং নিরাপত্তা কর্মীকে তাকে নিরাপদে নিচে নামানোর জন্য বলেন। কিন্তু অভিযোগ, ওই কর্মী কুকুরটির উপর নৃশংস অত্যাচার চালান। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ জনতা ওই নিরাপত্তা কর্মীকে ঘিরে ধরে মারধর করে।
বেদে মাংস ভক্ষণের সমর্থন নেই – প্রমাণসহ তথ্য !
পশুপ্রেমীদের ক্ষোভ ও আইনি পদক্ষেপ
এই মর্মান্তিক ঘটনায় পশুপ্রেমী মহল তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এক পশুপ্রেমী জানিয়েছেন, মৃত কুকুরটি পূর্ণ বয়স্ক ছিল। এই ঘটনার পর অভিযুক্ত নিরাপত্তা কর্মীর বিরুদ্ধে একটি FIR দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা। এই ঘটনাটি পশু সুরক্ষা আইনগুলির কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
কলকাতার নিউটাউনে খাবারে বিষ মিশিয়ে পথকুকুরদের হত্যাচেষ্টা
পশু নির্যাতন আইন ও তার কার্যকারিতা
উল্লেখ্য, পশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইন ১৯৬০ (Prevention of Cruelty to Animals Act, 1960) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২৮ ও ৪২৯ ধারায় পশু নির্যাতন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এসব ধারায় অভিযুক্তের জেল এবং জরিমানা উভয়ই হতে পারে। এই আইনে, কোনো প্রাণীকে হত্যা করা, আহত করা, বা অযৌক্তিকভাবে কষ্ট দেওয়া গুরুতর অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হয়। তবে, বারবার এমন ঘটনা ঘটায় এই আইনগুলির প্রয়োগ ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমেই কেবল এমন নৃশংস ঘটনা রোধ করা সম্ভব বলে মনে করছেন পশু অধিকার কর্মীরা।
এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে দিল যে পশুপাখিদের প্রতি সংবেদনশীলতা ও সহানুভূতির কতটা প্রয়োজন। আশা করা যায়, এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে ভবিষ্যতে এমন নির্মমতা বন্ধ হবে। তবে , পথপশুদের নিয়ন্ত্রণ , স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার দায়িত্ব প্রধানত সেই অঞ্চলের পৌর কর্তৃপক্ষের । আবাসনের অপ্রশিক্ষিত সুরক্ষা কর্মী দ্বারা নিয়ন্ত্রণে এইরুপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি নিশ্চিত ।