SSC exam protest

ব্যুরো নিউজ,১১ এপ্রিল: পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় এক ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের নির্দেশে বাতিল করা হয়েছে ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল, যার ফলে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি চলে গেছে। দুর্নীতির জাল এতটাই গভীর যে, যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে পার্থক্য করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে আদালত। ফলে পুরো প্যানেলকেই অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করা হয়েছে। ২০১৬ সালের এই নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সাল থেকে তদন্ত করছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে একাধিক চার্জশিট। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কর্মকর্তার নাম উঠে এসেছে এই মামলায়। মূল ষড়যন্ত্রে জড়িত চার প্রধান অভিযুক্ত হলেন: শান্তিপ্রসাদ সিন্‌হা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা এবং কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের মতে, এই চারজনই এসএসসি দুর্নীতির ‘মূলচক্রী’।

১৪ বছর পর ‘নিরাপদ’ হলেন নিরাপদ মণ্ডলের পরিবার!

মূলচক্রের ভূমিকা

শান্তিপ্রসাদ সিন্‌হা, এসএসসি-র পরামর্শদাতা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ, তিনি অযোগ্য প্রার্থীদের জন্য জাল সুপারিশপত্র তৈরি করিয়ে নিয়োগে সহায়তা করেন। ওএমআর শিটের ব্যাকআপ ও সফটকপি নিজে হাতে নষ্ট করে দেন। বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীদের বেআইনি ভাবে নিয়োগেও তাঁর ভূমিকা ছিল। সুবীরেশ ভট্টাচার্য, এসএসসি-র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালীন ওএমআর নম্বরে কারচুপি করেন। নির্দিষ্ট কিছু প্রার্থীর নম্বর বাড়িয়ে দিয়ে তাঁদের ইন্টারভিউতে উত্তীর্ণ করা হয়। তিনি নম্বর পরিবর্তনের নির্দেশ দেন মৌখিকভাবে এবং সফটকপি নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন।

শোরুমের মার্বেলে লুকিয়ে আছে পাঁচ বিঘার গল্প! কি সেই গল্প?

অশোক সাহা, আরেকজন প্রাক্তন চেয়ারম্যান, তিনিও ১৮৩টি জাল সুপারিশপত্রের মাধ্যমে অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দেন। উত্তরপত্রের ব্যাকআপ ও সফটকপি নষ্ট করতেও তিনি সহায়তা করেন। কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, যদিও এসএসসি-র সদস্য নন, তবে তিনি ছিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি। শান্তিপ্রসাদের সঙ্গে মিলে তিনিও ১৮৩ জন অযোগ্য প্রার্থীকে চাকরি পাইয়ে দেন। সুপারিশপত্রের ভিত্তিতে ৯০ দিনের মধ্যে তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র পৌঁছে দেওয়ার কাজেও ছিলেন তিনি।

প্রাচীন DNA-র মাধ্যমে পৃথিবীতে ফিরল Dire Wolf, ইতিহাসের নতুন অধ্যায়

এসবের পাশাপাশি, চার্জশিটে আরও কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে— যেমন, পর্ণা বোস, প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিংহ, জুঁই দাস, আজ়াদ আলি ও ইমাম মোমিন। তারা কেউ এসএসসি কর্মী, কেউ মিডলম্যান, কেউবা দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পাওয়া শিক্ষক। এই ঘটনার পর রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বহু যোগ্য চাকরিপ্রার্থী দীর্ঘদিন ধরে পথে আন্দোলন করে আসছেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর যদিও তাদের সুবিচারের আশা তৈরি হয়েছে, তবে বিপুল সংখ্যক চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকার ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তার মুখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর