বাবা বৈদ্যনাথ ধামে মহাশিবরাত্রির বিশেষ পুজোঃ চতুষ্প্রহর পুজো

ব্যুরো নিউজ,২৬ ফেব্রুয়ারি :মহাশিবরাত্রি হিন্দু ধর্মে এক বিশেষ দিন, যা ভগবান শিবের উপাসনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনে শিবভক্তরা তাঁর পুজো করেন এবং তাঁর আশীর্বাদ লাভের জন্য নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন। বিশেষত, দেওঘরের বাবা বৈদ্যনাথ ধাম এই দিনটি উপলক্ষে নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য খুবই জনপ্রিয়। এখানে শিব এবং মা পার্বতীর বিবাহ, চতুষ্প্রহর পুজো, সিঁদুর দানসহ নানা ঐতিহ্য অনুসরণ করা হয়।বাবা বৈদ্যনাথ ধাম ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে অবস্থিত, যা বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হিসেবে বিবেচিত হয়।

মহাকুম্ভে পূণ্যার্থীদের জন্য নিরাপত্তার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা: শিবরাত্রির শেষ শাহি স্নান

চতুষ্প্রহর পুজোসিঁদুর দান

মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে এখানে ভক্তদের জন্য বিশেষ পুজো এবং অন্যান্য ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে চতুষ্প্রহর পুজোসিঁদুর দান অন্যতম আকর্ষণ। এই পুজোতে শিব এবং পার্বতীর মিলন এবং তাঁদের বিবাহের দৃশ্য অনেক ভক্তদের জন্য এক অদ্ভুত আনন্দের মুহূর্ত তৈরি করে।এখানে পঞ্চশূল নামে একটি বিশেষ ধর্মীয় উপকরণ স্থাপন করা হয়, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পঞ্চশূল মন্দিরের চূড়ায় স্থাপন করা হয় এবং এই পঞ্চশূলের বিশ্বাস অনুসারে, এটি লঙ্কার রাজা রাবণের সঙ্গে সম্পর্কিত। রাবণ এই পঞ্চশূলকে শিবের মন্দিরে স্থাপন করেছিলেন যাতে তাঁর রাজ্য রক্ষা পায়।

এসব পঞ্চশূল মানবদেহের পাঁচটি দুষিত গুণের প্রতীক এবং এটি মানবদেহের পাঁচটি রোগ—কাম, ক্রোধ, লোভ, আসক্তি এবং ঈর্ষা—ধ্বংস করে। তাছাড়া, পঞ্চশূল পৃথিবী এবং আধ্যাত্মিক শক্তির এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।বাবা বৈদ্যনাথ ধাম মহাশিবরাত্রির পুজো নিয়ে আরও একটি বিশেষ বিষয় হল মা শক্তির পূজা। এখানে মা শক্তি এবং ভগবান শিব একত্রে বিরাজ করেন। শিবপূজার সঙ্গে মা শক্তির পূজা করা হয়, যা তন্ত্র সাধনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, পঞ্চশূল দর্শন করলে সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয় এবং ভক্তদের জীবনে শুভ ফল আসে।

মহাশিবরাত্রিতে শিবলিঙ্গে কি নিবেদন করা উচিত এবং কী নিষিদ্ধ? জানুন

মহাশিবরাত্রির দিন, বাবা বৈদ্যনাথ ধামে একটি বিশেষ সিঁদুর দানের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, যা শিববিবাহের ঐতিহ্য অনুযায়ী পালিত হয়। পাশাপাশি, ময়ূরের মুকুট শিবলিঙ্গে অর্পণ করার একটি ঐতিহ্য রয়েছে, যা অবিবাহিত ভক্তদের জন্য খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। ময়ূরের মুকুট অর্পণ করলে বিবাহের বাধা কাটিয়ে ওঠা যায় বলে বিশ্বাস করা হয়।এই ধরনের আচার-অনুষ্ঠানগুলো শিবভক্তদের জন্য একটি পবিত্র ও আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করে। মহাশিবরাত্রির দিন, বাবা বৈদ্যনাথ ধামে ভক্তরা সারারাত ধরে শিবপূজায় লিপ্ত থাকেন এবং তাঁদের অন্তরের কাঙ্ক্ষিত ফল লাভের আশায় শুদ্ধ মন নিয়ে প্রার্থনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর