Xi Jingping Socialist Buddhism tibet

ব্যুরো নিউজ ২৫শে আগস্ট ২০২৫ : চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং অবশেষে তিব্বতে পদধূলি দিলেন। উদ্দেশ্য? সেখানকার বৌদ্ধধর্মের জমাটবাঁধা অন্ধকারে সমাজতন্ত্রের ‘উজ্জ্বল’ আলো ফেলা। দীর্ঘ ষাট বছর ধরে স্বশাসিত অঞ্চলের তকমা গায়ে লাগিয়ে ঘুরলেও, তিব্বত আসলে যে বেজিংয়ের হাতের মুঠোয়, সেটাই আরও একবার প্রমাণ করতে এই ‘ছোট্ট’ সফর।


দালাই লামা? ওহ, তিনি তো ইতিহাসের ধুলো!

লাসার ২০,০০০ ‘উৎসাহী’ জনতার সামনে জিনপিং যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন একটি বিষয় স্পষ্ট – তিব্বতের নির্বাসিত আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামার কথা যেন কেউ ভুলেও উচ্চারণ না করে! তিনি বরং জানালেন, তিব্বতি বৌদ্ধধর্মকে এবার ‘আধুনিক’ হতে হবে। বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই, আধুনিক মানে কী? সমাজতন্ত্রের পথে হাঁটা আর কি! পুরনো দিনের ধ্যানধারণা এখন ব্যাকডেটেড।

China Spy Ship : ভারতের উপকূলের কাছে চীনা জাহাজের ‘গুপ্তচরবৃত্তি’, এইআইএস বন্ধ করে নজরদারি


ধর্মের ‘চীনেকরণ’: আর কোনও পথ নেই!

জিনপিং ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ‘সিনিকাইজেশন’ বা ধর্মের ‘চীনেকরণ’-এর কথা বলে আসছেন। এটা আসলে ধর্মকে নিয়ন্ত্রণ করা নয়, বরং চীনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। তিব্বতের বৌদ্ধধর্ম চীনের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে এক নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করবে—এমনটাই আশা। ভাবুন তো, হয়তো এমন একটা সময় আসবে যখন লামারাও লাল ঝান্ডা হাতে ‘সর্বহারাদের মুক্তি’র গান গাইবেন!

তিব্বতীয় বৌদ্ধধর্মের বঙ্গীয় উৎস

উল্লেখযোগ্য, গোটা ভারতবর্ষের মধ্যে একসময় সনাতন আদর্শের অন্যতম স্থান ছিল বঙ্গ। পাল রাজাদের রাজত্বকালে বঙ্গে আবির্ভাব ঘটে তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্মের, যাকে বজ্রযান বৌদ্ধধর্ম বলা হয়। এই দর্শনকে বহন করে তিব্বতে নিয়ে গিয়েছিলেন গুরু পদ্মসম্ভব, যার জন্মস্থান বিহার এবং ওড়িশার মধ্যবর্তী স্থান, অর্থাৎ এই বঙ্গেই। গুরু পদ্মসম্ভবের দ্বারাই তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের জন্ম। তাই তিব্বতে চীনের রাষ্ট্রপতির বার্তার পর এই বঙ্গীয় অবদান আবারও হবে বামপন্থার শিকার !

PM Modi : গালওয়ান সংঘাতের পর প্রথম সফর, SCO শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী


তিব্বতের ভবিষ্যৎ: যেখানে ঐতিহ্যও কমিউনিস্ট পার্টির নিয়ন্ত্রণে

মোটকথা, জিনপিংয়ের এই তিব্বত সফরের একটাই উদ্দেশ্য—বৌদ্ধধর্ম তার নিজস্ব ঐতিহ্য এবং দর্শন নিয়ে আর চলতে পারবে না। তাকে কমিউনিস্ট চীনের সমাজতান্ত্রিক নীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তিব্বত তো চীনের ‘দখলকৃত’ ভূখণ্ড, তাই সেখানকার নিজস্ব সংস্কৃতি এবং সমাজকে চীনের কমিউনিস্ট সমাজের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার এই প্রচেষ্টা হয়তো সময়ের অপেক্ষা। তিব্বতের আধ্যাত্মিক এবং সাংস্কৃতিক পরিচিতিকে মুছে ফেলে এক ‘নতুন’ তিব্বত তৈরি করার স্বপ্ন দেখছে বেজিং। এখন দেখার, এই ‘নতুন’ তিব্বতে হাস্যরসের আদৌ কোনও স্থান থাকে কিনা!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর