ব্যুরো নিউজ ১৩ আগস্ট ২০২৫ : দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ‘ E ‘ গেটের সামনে তিনজন মহিলা গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পুলিশ দ্রুত হস্তক্ষেপ করে তাদের এই কাজ থেকে বিরত করে।
কী ঘটেছিল?
মঙ্গলবার মধ্য সকালে এই তিন মহিলা হাইকোর্টের বাইরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পুলিশ কর্মীদের তৎপরতায় তাদের দ্রুত আটক করা হয়। এরপর তাদের এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেয়ার স্ট্রিট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ওই তিন মহিলা নিজেদেরকে আমগাছিয়া সৃষ্টি সংঘ প্রাথমিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য বলে পরিচয় দেন। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সমবায়টি উচ্চ সুদের লোভ দেখিয়ে সদস্যদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা জমা নিচ্ছিল, কিন্তু সময় মতো সেই টাকা বা সুদ ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
ভোটার তালিকা নিয়ে আদালতের নির্দেশ অমান্য
মহিলাদের অভিযোগ, সম্প্রতি সমবায়ের নির্বাচন চলাকালীন কলকাতা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেয়। কিন্তু সমিতির পরিচালন কমিটি সেই নির্দেশ অমান্য করে তাদের নাম ইচ্ছাকৃতভাবে তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে।
এক মহিলা সাংবাদিকদের জানান, “এটা একটা বড়ো কেলেঙ্কারি। এই সমবায়ের ভেতরে একটা গোটা অপরাধ চক্র কাজ করছে, কিন্তু আমরা কোনো বিচার পাচ্ছি না।”
পুলিশের প্রতিক্রিয়া ও তদন্ত
এই ঘটনায় হাইকোর্টের সামনে ব্যাপক ভিড় জমে যায় এবং কিছুক্ষণের জন্য স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানান যে, অভিযোগগুলোর তদন্ত শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখব এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।” এই বিষয়ে সমবায়ের পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ ও আধা-শহুরে সমবায় সমিতিগুলোতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও এমন ঘটনায় বিভিন্ন সময় আইনি বিবাদ ও আমানতকারীদের প্রতিবাদ দেখা গেছে।