ব্যুরো নিউজ,২৯ এপ্রিল: ৩০ এপ্রিল, দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের দিনেই কাঁথিতে ‘সনাতনী হিন্দু সম্মেলন’ করার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে শর্তসাপেক্ষে এই কর্মসূচি আয়োজন করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সম্মেলনে মূল বক্তা থাকবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সম্মেলন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা
এই সম্মেলনের অনুমতির জন্য একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। মামলার শুনানি চলে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে। সোমবার দীর্ঘ সময় ধরে শুনানি হলেও চূড়ান্ত রায় হয়নি। মঙ্গলবার বিচারপতি ঘোষ জানান, এই কর্মসূচি ৩০ এপ্রিল করা যেতে পারে তবে শুধুমাত্র ৩ হাজার মানুষ উপস্থিত থাকতে পারবেন।
রাজ্য সরকার শুরু থেকেই এই কর্মসূচির তারিখ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল। তাদের বক্তব্য, ৩০ এপ্রিল দিঘায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হবে। সেখানে বিভিন্ন ভিভিআইপি উপস্থিত থাকবেন, এবং নিরাপত্তার কারণে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। ফলে একই দিনে কাঁথিতে আলাদা সভা হলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য আদালতে জানান, দিঘা ও কাঁথির মধ্যে অনেকটা দূরত্ব রয়েছে। তাই একই জেলায় হলেও পৃথক কর্মসূচি হলে তা কোনও নিরাপত্তার সমস্যা তৈরি করে না। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এক জায়গায় বড় অনুষ্ঠান থাকলে জেলার অন্য অংশে কেন সভা করা যাবে না?”
মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, পুলিশবাহিনী সীমিত। একই দিনে দু’টি বড় কর্মসূচিতে মোতায়েন করা সম্ভব নয়।তবে আদালত মামলাকারীদের যুক্তিকে মেনে নিয়ে জানায়, নির্দিষ্ট লোকসংখ্যার সীমার মধ্যে থেকে কাঁথিতে শান্তিপূর্ণভাবে এই ‘সনাতনী হিন্দু সম্মেলন’ আয়োজন করা যেতে পারে।
শুভেন্দু অধিকারী যদিও সরাসরি উদ্যোক্তা নন, তবে তিনিই এই সভার মুখ। এই সম্মেলন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে রাজ্যে। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ উঠেছে, ধর্মীয় আবরণে রাজনৈতিক প্রচার চালাতে চাইছে বিরোধীরা।
অন্যদিকে বিজেপি দাবি করছে, রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা রোধ করতে চাইছে। তারা আদালতের রায়কে ‘গণতন্ত্রের জয়’ বলে বর্ণনা করেছে।
৩০ এপ্রিল, দুই বড় কর্মসূচি— একদিকে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন, অন্যদিকে কাঁথির হিন্দু সম্মেলন— রাজ্যের রাজনৈতিক আবহে উত্তাপ আরও বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।