ব্যুরো নিউজ ০৭ জুলাই ২০২৫ : ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার (৬ জুলাই, ২০২৫) রাজ্যজুড়ে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে বিজেপি। রাজ্য বিজেপি সভাপতি হিসেবে দু’দিন আগে দায়িত্ব গ্রহণ করা শমীক ভট্টাচার্য এই দিনটিকে রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করেন এবং একইসঙ্গে বাম ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে শমীক ভট্টাচার্যের অভিযোগ
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে শমীক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন যে, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যেখানে দেশভাগের সময় বাঙালি হিন্দুদের উপর অত্যাচার রুখেছিলেন এবং পশ্চিমবঙ্গের স্বতন্ত্র পরিচয় রক্ষা করেছিলেন, সেখানে বর্তমান তৃণমূল সরকার “কট্টরপন্থী উপাদান”-দের প্রশ্রয় দিচ্ছে। তিনি বলেন, এই কট্টরপন্থীরা বিভাজনের আগের সহিংস দিনগুলি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, “ইসলামিক মৌলবাদ বিশ্বজুড়ে একটি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং এই হুমকিকে আমাদের সবাইকে রুখতে হবে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “তুষ্টিকরণের রাজনীতির কারণে তৃণমূল বাংলায় কট্টর ইসলামপন্থীদের বৃদ্ধি আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে। গরিব, সাধারণ এবং জাতীয়তাবাদী মুসলিমদেরও ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, অথচ তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।”
বাম ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর কৌশল: জ্যোতি বসুর প্রসঙ্গ
রাজ্য বিজেপি সভাপতি হওয়ার পর থেকেই শমীক ভট্টাচার্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং জ্যোতি বসুর নাম একই সঙ্গে উচ্চারণ করছেন। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিরোধী বাম ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর এটি বিজেপির একটি কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে। শমীক ভট্টাচার্য তাঁর বক্তব্যে বলেন, “তাঁর (শ্যামাপ্রসাদের) দূরদৃষ্টি জ্যোতি বসুর মতো একজন কমিউনিস্ট ব্যক্তিত্বকেও প্রভাবিত করেছিল। এমন ব্যক্তিত্ব থাকার পরেও, আমরা এখন এমন এক শাসনের অধীনে আছি যা বাংলাকে ১৯৪৬ সালের মতো পরিস্থিতিতে নিয়ে গেছে। এই মুহূর্তে আমাদের তা আটকাতে হবে। আমাদের শ্যামাপ্রসাদের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে।”
বিজেপির প্রতিশ্রুতির কথা
শমীক ভট্টাচার্য জানান যে, বিজেপি “কট্টরপন্থী উপাদান”-এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে এবং পিছিয়ে পড়া মুসলিম সহ প্রতিটি সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য কাজ করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টার কারণেই দেশভাগের পর পশ্চিমবঙ্গ তার পরিচয় ধরে রাখতে পেরেছে।
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘অতুলনীয় সাহস’-কে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর প্রয়াণ দিবসে ।
উদযাপন ও জনসমাগম
গতকাল মধ্য কলকাতার বিজেপি রাজ্য সদর দফতর এবং ভবানীপুরে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাসভবনে শত শত মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন। এই দিনটি উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।