nuclear power plant and submarine russia to india

ব্যুরো নিউজ, ০৫ই ডিসেম্বর ২০২৫ : রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দুই দিনের ভারত সফরের মধ্যেই তামিলনাড়ুর কুদানকুলাম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় চুল্লির জন্য পারমাণবিক জ্বালানির প্রথম চালান ভারতে এসে পৌঁছেছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু কর্পোরেশন রোসাটম (Rosatom) একটি কার্গো ফ্লাইটে এই জ্বালানি অ্যাসেম্বলি সরবরাহ করেছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

কুদানকুলামে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি

কুদানকুলাম কেন্দ্রের ৩ নম্বর চুল্লির পুরো কোর এবং কিছু সংরক্ষিত জ্বালানি মোট সাতটি কার্গো ফ্লাইটে ভারতে পৌঁছে দেওয়া হবে। এই জ্বালানি নভোসিবির্স্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্টে তৈরি হয়েছে।

  • ২০২৪ সালে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে এই সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার অধীনে কুদানকুলামের ৩ ও ৪ নম্বর ভিভিইআর-১০০০ (VVER-1000) চুল্লির সম্পূর্ণ পরিষেবা জীবনকালের জন্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে।

  • কুদানকুলামে মোট ৬টি ভিভিইআর-১০০০ চুল্লি স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে, যার মাধ্যমে ৬,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। প্রথম দুটি চুল্লি যথাক্রমে ২০১৩ এবং ২০১৬ সালে ভারতের বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত হয়েছে।

Putin India visit : পুতিনের ‘দুর্গ’ ভাঙল বন্ধুত্বের কারণে! মোদির সঙ্গে ‘সাধারণ’ টয়োটা ফরচুনারে যাত্রা !

পশ্চিমী অপপ্রচার খারিজ: সাবমেরিন চুক্তি পুরনো

এদিকে, পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম কর্তৃক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু অপপ্রচারের খবর কেন্দ্রীয় সরকার খারিজ করেছে। ব্লুমবার্গ-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন সাবমেরিন চুক্তি চূড়ান্ত করেছে।

সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে যে কোনো নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি, এবং প্রতিবেদনে উল্লিখিত পারমাণবিক চালিত অ্যাটাক সাবমেরিনটি ২০১৯ সালের মার্চ মাসের বিদ্যমান লিজ চুক্তির অংশ। এই সাবমেরিনের সরবরাহের সময়সীমা পিছিয়ে ২০২৮ করা হয়েছে। সরকার #PIBFactCheck ট্যাগ করে জানিয়েছে, রিপোর্টটি বিভ্রান্তিকর এবং চুক্তির বিলম্বের জন্য রাশিয়া দায়ী।

গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি চূড়ান্তের পথে

প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই সফরের সময় দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে:

  • বিমান বাহিনী: এসইউ-৩০ (Su-30) ফাইটার জেটের দ্বিতীয় ওভারহোলিং প্রকল্পটি রাশিয়ার সঙ্গে অংশীদারিত্বে উন্নত করা হবে, যার লক্ষ্য হবে বিমানগুলিকে আধুনিকতম মানে উন্নীত করা। প্রায় ১০০টি বিমান এর আওতায় আসবে।

  • ক্ষেপণাস্ত্র: ভারতের সামরিক বহরের জন্য আর-৩৭ (R-37) আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র (যা ২০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে পারে) এবং এস-৪০০/৫০০ দূরপাল্লার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

  • S-400 সরবরাহ: পাকিস্তান এয়ার ফোর্স এবং গুপ্তচর বিমানের বিরুদ্ধে সফলভাবে ব্যবহৃত এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের অবশিষ্ট দুটি স্কোয়াড্রন দ্রুত সরবরাহের জন্য ভারত তাগিদ দেবে।

Putin India visit : ইউক্রেন সংঘাতে ভারত ‘নিরপেক্ষ নয়’, আমরা শান্তির পক্ষে: পুতিনকে বললেন মোদি

অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠন ও বাণিজ্যের লক্ষ্য

হায়দ্রাবাদ হাউসে আলোচনার মূল এজেন্ডা হলো অর্থনৈতিক সম্পর্ককে পুনর্গঠন করা এবং বহিরাগত নিষেধাজ্ঞা থেকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে রক্ষা করা।

  • ১০০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্য: দুই নেতা ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নিয়ে কৌশলগত অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচির ঘোষণা করবেন।

  • বাণিজ্য ঘাটতি: রুশ তেল আমদানির কারণে যে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা মেটাতে ভারত জোর দেবে। ওষুধ, অটোমোবাইল, কৃষি এবং সামুদ্রিক পণ্যের মতো ক্ষেত্রে রাশিয়ার বাজারে ভারতীয় ব্যবসার উপস্থিতি বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হবে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বৃহস্পতিবার রাতে ভারতে পৌঁছান এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পর দুই নেতা একই গাড়িতে করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নৈশভোজে যোগ দেন। দ্বিতীয় দিনে রাজঘাটে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনার পর তিনি মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর