ব্যুরো নিউজ ১৩ জুন: দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর ২০২৫ সালে এই প্রথমবার জাঁকজমকভাবে রথযাত্রার আয়োজন হতে চলেছে, আর সেই অনুষ্ঠানকে ঘিরেই এখন উত্তপ্ত বাংলার রাজনীতি। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেস রথযাত্রাকে ঘিরে নানা সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত, অন্যদিকে এবার বিজেপিও মাঠে নেমে নিজেদের ‘হিন্দুত্বের বার্তা’ ছড়িয়ে দিতে শুরু করেছে।
রথের চাকা ঘুরবে ধর্ম ও রাজনীতির যুগল রথে!
বুধবার কলকাতার আইসিসিআরে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় এক গুরুত্বপূর্ণ সভা। সভায় উপস্থিত ছিলেন ২০টি রথযাত্রা কমিটির প্রতিনিধি ও সাধুসন্তরা। এই কর্মসূচির নামকরণই স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা বহন করে—”হিন্দুদের এক করো, রথযাত্রা পালন করো”। শুভেন্দু সরাসরি ঘোষণা করেন, ‘‘রামনবমীতে রাজ্যে দেড় কোটিরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন। এবার রথেও সেই উদ্দীপনা চাই। রাস্তা সাজিয়ে তুলুন, ভরিয়ে দিন রাজপথ।’’
মহেশতলা পরিস্থিতি : পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, বিরোধীদের বাধা, চাপা উত্তেজনার মধ্যেই জারি ১৪৪ ধারা
এই ঘোষণার মাধ্যমে বিজেপি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল—রথযাত্রা শুধুই ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং তা হয়ে উঠতে চলেছে একটি রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ। শুভেন্দু জানান, মেচেদা, তমলুক সহ একাধিক এলাকায় রথযাত্রার দিনে তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন, এবং বিজেপির তরফ থেকে রথ কমিটিগুলিকে আর্থিক ও সাংগঠনিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, অক্ষয় তৃতীয়ায় দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই তৃণমূলের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রথযাত্রাকে ঘিরে নানা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে বিজেপির এই পাল্টা রণকৌশল সরাসরি ভোট রাজনীতির বার্তা বহন করে বলে রাজনৈতিক মহলের মত।
বাংলাদেশে রবীন্দ্র-স্মৃতির অবমাননা: শাহজাদপুরে কবিগুরুর কাচারিবাড়িতে ভাঙচুর, বিজেপির প্রতিক্রিয়া
শুভেন্দুর এই বক্তব্য ও পদক্ষেপ থেকে স্পষ্ট, আগামী নির্বাচনী লড়াইয়ে ধর্মীয় আবেগ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে কাজে লাগিয়ে “গ্রাসরুটে ধর্মীয় মেরুকরণ” চালাতে চাইছে বিজেপি। এদিকে তৃণমূলও ছাড় দিতে নারাজ। ফলে রথযাত্রা এবার আর কেবল দেবদেবীর মেলা নয়, হয়ে উঠছে রাজ্য রাজনীতির নতুন যুদ্ধক্ষেত্র।
এই পরিস্থিতিতে, প্রশ্ন উঠছে—পবিত্র রথযাত্রা কি এবার রাজনীতির রথচক্রে বন্দি হয়ে পড়ছে? সময়ই দেবে উত্তর। তবে এখনই নিশ্চিত করে বলা যায়—রথের চাকা ঘুরবে ধর্ম ও রাজনীতির যুগল রথে !