ব্যুরো নিউজ ২ জুন  : নির্বাচন কমিশন (ECI) অসমের দুটি এবং তামিলনাড়ুর ছয়টি রাজ্যসভা আসনের জন্য দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। আগামী ১৯ জুন এই আটটি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোট গণনাও একই দিনে বিকেল ৪টের পর শুরু হবে। সংসদের উচ্চকক্ষে দলীয় সমীকরণ এবং ক্ষমতা ভারসাম্যের ক্ষেত্রে এই নির্বাচনগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।


নির্বাচনের বিস্তারিত সময়সূচি

নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, এই নির্বাচনগুলির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে:

  • মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ: ৯ জুন
  • মনোনয়নপত্র যাচাইয়ের তারিখ: ১০ জুন
  • প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ: ১২ জুন
  • ভোটগ্রহণের তারিখ: ১৯ জুন (সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত)
  • ভোট গণনা: ১৯ জুন (ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর)
  • নির্বাচন সম্পন্ন করার তারিখ: ২৩ জুন

আসন শূন্য হওয়ার কারণ:

অসমের দুটি আসন ১৪ জুন শূন্য হবে, কারণ বর্তমান দুই সদস্যের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। অন্যদিকে, তামিলনাড়ুর ছয়টি আসন ২৪ জুলাই শূন্য হবে, সেখানেও বর্তমান ছয় সদস্যের মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে।

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে


রাজ্যসভার বর্তমান চিত্র ও আসন্ন নির্বাচন:

ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ, রাজ্যসভার মোট আসন সংখ্যা ২৪৫। এর মধ্যে ২৩৩ জন সদস্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভা থেকে নির্বাচিত হন এবং ১২ জন সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত হন। এই নির্বাচনগুলির ফলাফল রাজ্যসভায় বিভিন্ন দলের শক্তি পুনর্বিন্যাসে সরাসরি প্রভাব ফেলবে, যা গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করানোর ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করতে পারে অথবা সরকারের জন্য সুবিধা তৈরি করতে পারে।


অসমের দুটি আসন:

অসমে দুটি রাজ্যসভা আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বর্তমানে এই আসনগুলিতে কোন দলের সদস্য রয়েছেন এবং নির্বাচনের পর তাদের সম্ভাব্য ফলাফল কী হতে পারে, তা নির্ভর করবে অসম বিধানসভার বর্তমান দলীয় শক্তির ওপর। বিজেপি এবং তাদের জোটসঙ্গীরা বর্তমানে অসমে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, তাই অনুমান করা হচ্ছে যে তারা এই দুটি আসনেই জয়ী হতে পারে, যা তাদের রাজ্যসভার শক্তি আরও বাড়াবে।


তামিলনাড়ুর ছয়টি আসন:

তামিলনাড়ুতে ছয়টি রাজ্যসভা আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই রাজ্যে ডিএমকে (DMK) এবং তাদের জোটসঙ্গীরা (যেমন কংগ্রেস) সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই, এই ছয়টি আসনের বেশিরভাগই ডিএমকে-নেতৃত্বাধীন জোটের দখলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যদি তাই হয়, তবে এটি রাজ্যসভায় বিরোধী জোটের শক্তিকে আরও বাড়াতে পারে, যা কেন্দ্রের শাসক দলের জন্য বিল পাশ করানোর ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।


ফলাফলের সম্ভাব্য প্রভাব:

রাজ্যসভায় কোনো দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে গুরুত্বপূর্ণ বিল, বিশেষ করে সাংবিধানিক সংশোধনী বিল বা বিতর্কিত আইন পাশ করানো সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।


নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিশেষ নির্দেশিকা

নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। ব্যালট পেপারে পছন্দের ক্রম চিহ্নিত করার জন্য রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক সরবরাহকৃত নির্দিষ্ট বেগুনি রঙের স্কেচ পেন ব্যবহার করতে হবে। অন্য কোনো পেন কোনো অবস্থাতেই ব্যবহারের অনুমতি নেই।

নির্বাচন প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে। এছাড়াও, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সময়ে সময়ে জারি করা কোভিড-১৯ নির্দেশিকা পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া জুড়ে প্রযোজ্য হবে, যেখানে প্রয়োজন।

আগামী ১৯ জুনের এই নির্বাচনগুলি রাজ্যসভার দলীয় চিত্রকে কতটা পরিবর্তন করে, এবং তা আগামী দিনে ভারতের রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলে, সেদিকেই এখন সবার নজর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর