ব্যুরো নিউজ, ০৫ই ডিসেম্বর ২০২৫ : প্রায় আট দশকের পুরনো দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বকে আরও সুদৃঢ় করতে এক গুরুত্বপূর্ণ সফরে বৃহস্পতিবার রাতে ভারতে এসেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও এই সম্পর্ক দীর্ঘকাল ধরে অটুট রয়েছে। এই সফরটি প্রায় ২৭ ঘণ্টার।
প্রটোকল ভেঙে মোদির উষ্ণ অভ্যর্থনা
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যেকার গভীর সম্পর্ককে আরও একবার তুলে ধরে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথাগত সরকারি প্রটোকল ভেঙে পুতিনকে ব্যক্তিগতভাবে নতুন দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। চার বছর পর ভারতে আসা রুশ প্রেসিডেন্টকে মোদি আলিঙ্গন করেন। এমন বিরল কূটনৈতিক আতিথেয়তা সম্পর্কের উষ্ণতাকেই প্রতিফলিত করে।
বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুতিনকে বরণ করা হয়। এরপর দুই নেতা একটিই গাড়িতে করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন, যা ‘কার মোমেন্ট’ নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, এর প্রায় তিন মাস আগে চিনের তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) শীর্ষ সম্মেলনের পরে মোদি এবং পুতিন একসঙ্গে গাড়িতে সফর করেছিলেন।
Ram Mandir Dhwaja : ঐতিহাসিক মুহূর্ত: রামরাজ্যের ধর্ম ধ্বজ উত্তোলন
‘খুশি’ ক্রেমলিন: অপ্রত্যাশিত অভ্যর্থনা
প্রধানমন্ত্রী মোদির এই অপ্রত্যাশিত অভ্যর্থনার প্রশংসা করেছে ক্রেমলিন। মস্কোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারত পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আগে থেকে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। তাই এটি আরও বেশি নজর কেড়েছে। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পুতিনকে স্বাগত জানাতে বিমান অবতরণের র্যাম্প পর্যন্ত মোদির এগিয়ে আসা ছিল অপ্রত্যাশিত, এবং রাশিয়াকে আগে থেকে জানানো হয়নি।”
নৈশভোজে দুই নেতার আলোচনা
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মোদি রুশ প্রেসিডেন্টের সম্মানে একটি ব্যক্তিগত নৈশভোজের আয়োজন করেছেন। গত বছর জুলাই মাসে মোদি মস্কো সফরে গেলে পুতিন তাঁকে যে আতিথেয়তা দিয়েছিলেন, এটি তারই প্রতিদান। আশা করা হচ্ছে, নৈশভোজের সময় দুই নেতার আলোচনা শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে চলা ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ বৈঠকের সুর বেঁধে দেবে।
বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য : প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও SMR
ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হতে চলেছে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করা, বহিরাগত চাপ থেকে ভারত-রাশিয়া বাণিজ্যকে রক্ষা করা এবং ক্ষুদ্র মডিউলার চুল্লি (Small Modular Reactors – SMR) ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করা। পশ্চিমা দেশগুলো এই বৈঠকের দিকে নিবিড়ভাবে নজর রাখবে।
সম্প্রতি ভারত-মার্কিন সম্পর্কের দ্রুত অবনতির পটভূমিতে রুশ প্রেসিডেন্টের এই দিল্লি সফর বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছে। শীর্ষ সম্মেলনের পর বাণিজ্য সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।



















