ব্যুরো নিউজ ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : সম্প্রতি চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (SCO) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই নেতা বাণিজ্য, সার, মহাকাশ, নিরাপত্তা এবং সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও গভীর করতে সম্মত হয়েছেন। বৈঠকটি এমন এক সময়ে হয়েছে যখন ভারত রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনা নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের চাপের মধ্যে রয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক: বৈশ্বিক চাপ উপেক্ষা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা শুল্কের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উত্তেজনা বাড়লেও ভারত ও রাশিয়া তাদের বিশেষ ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার তেল কেনার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় রপ্তানির ওপর ৫০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, যার মধ্যে অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানির সঙ্গে যুক্ত। তা সত্ত্বেও, ভারত তার জ্বালানি চাহিদা পূরণের জন্য রাশিয়ার তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছে।
পুতিনের কড়া সমালোচনা
ইউরোপের প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি এই ধরনের পদক্ষেপকে উপনিবেশিক আমলের চিন্তাভাবনার অবশেষ হিসেবে অভিহিত করেছেন। পুতিনের মতে, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা ঐতিহাসিক সংবেদনশীলতা সহ দেশগুলোর নেতাদের জন্য গুরুতর রাজনৈতিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন যে, ইউক্রেন সংঘাতকে পশ্চিমা দেশগুলো কেবল একটি অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে যাতে তারা রাশিয়ার সঙ্গে শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা দেশগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে।
ইউক্রেন সংঘাত ও শান্তি প্রচেষ্টা
মোদি এবং পুতিনের মধ্যে ৫০ মিনিটের এই বৈঠকে ইউক্রেন সংঘাত নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা ইউক্রেনের চলমান সংঘাত নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করেছি। আমরা সকল সাম্প্রতিক শান্তি প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই এবং আশা করি যে সকল পক্ষ গঠনমূলকভাবে এগিয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন যে, যত দ্রুত সম্ভব সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা মানবতার দাবি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি
বৈঠকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার ওপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়। ভারত ও রাশিয়া শক্তি, অর্থ এবং বাণিজ্যের মতো ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা গভীর করতে চাইছে। দুই নেতা এই ক্ষেত্রগুলিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিক বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি এই বছরের শেষের দিকে ২৩তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের জন্য পুতিনকে ভারতে স্বাগত জানানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।