ব্যুরো নিউজ ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : শারদিয়া নবরাত্রির পবিত্র সূচনাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে এই উৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং একইসঙ্গে ‘জিএসটি সাশ্রয় উৎসব’ নামে নতুন প্রজন্মের জিএসটি সংস্কারের সূচনা ঘোষণা করেছেন। এই সংস্কারকে তিনি দেশবাসীর জন্য ‘ডাবল ধামাকা’ বলে অভিহিত করেছেন, কারণ এটি একদিকে যেমন নবরাত্রির আনন্দ বাড়াবে, তেমনই মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সঞ্চয় বৃদ্ধি করবে।
নবরাত্রির শুভেচ্ছা ও শক্তি আরাধনা
প্রধানমন্ত্রী মোদী এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছেন, “নবরাত্রির শুভ দিনে সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা। ভক্তি, সাহস, সংযম এবং সংকল্পে পরিপূর্ণ এই পবিত্র উৎসব সকলের জীবনে নতুন শক্তি এবং বিশ্বাস নিয়ে আসুক। জয় মাতা দি!” তিনি আরও জানান, প্রথম দিনটি ‘মা শৈলপুত্রী’-এর বিশেষ পূজার জন্য উৎসর্গীকৃত এবং তিনি প্রার্থনা করেন যেন দেবীর ভালোবাসা ও আশীর্বাদে সকলের জীবন সৌভাগ্য ও সুস্বাস্থ্যে ভরে ওঠে।
GST : স্বাস্থ্য ও জীবন বিমায় কোনো কর নয় , নেশাদ্রব্যে বর্ধিত কর ; কেন্দ্রের নতুন জিএসটি নীতি !
জিএসটি সাশ্রয় উৎসব: কেন এটি বিশেষ?
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, এই বছরের নবরাত্রি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি জিএসটি সাশ্রয় উৎসবের সঙ্গে মিলে গেছে। এর ফলে ‘স্বদেশী’-এর মন্ত্র নতুন গতি পাবে। রবিবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি জানান, এই সংস্কার দেশের অর্থনৈতিক যাত্রায় একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
আজ থেকে কার্যকর হওয়া জিএসটি ২.০ সংস্কারের ফলে প্রায় ৩৫০টি পণ্যের উপর করের হার কমেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন খাদ্য, ওষুধ, সাবান, টুথপেস্ট থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স, সরঞ্জাম এবং গাড়ির দামও সাধারণ মানুষের জন্য আরও সাশ্রয়ী হবে। এতে জিএসটির ৫% এবং ১৮%—এই দুটি হারই প্রধান থাকবে, এবং ১২% ও ২৮% স্ল্যাবগুলি তুলে নেওয়া হয়েছে।
সঞ্চয় এবং আত্মনির্ভর ভারত
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন জিএসটি ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশবাসীর সঞ্চয় বাড়বে এবং তারা তাদের পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে পারবেন। তিনি গত ১১ বছরে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমা থেকে উপরে তুলে আনার কথাও উল্লেখ করেন এবং বলেন যে এই ‘নব্য-মধ্যবিত্ত’ শ্রেণি ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মোদী দেশবাসীকে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়তে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা করার আহ্বান জানান এবং বলেন যে প্রতিটি বাড়ি ‘স্বদেশী’-এর প্রতীক হয়ে ওঠা উচিত। তিনি রাজ্য সরকারগুলিকেও এই অভিযানে সামিল হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
ঐতিহাসিক কর সংস্কার
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে জিএসটি-কে দেশের সবচেয়ে বড় কর সংস্কার হিসেবে তুলে ধরেন এবং ‘এক দেশ, এক কর’-এর স্বপ্ন পূরণের কথা বলেন। তিনি স্মরণ করেন যে ২০১৪ সালে তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর জনগণের স্বার্থে এবং জাতীয় স্বার্থে জিএসটি-কে অগ্রাধিকার দেয়। কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সংস্কার সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও জানান, এই জিএসটি সংস্কারের পাশাপাশি আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়ানোর ফলে সাধারণ মানুষ প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত যশরাজের গাওয়া একটি ভজনও শেয়ার করেন এবং দেশবাসীর কাছে তাদের প্রিয় ভজন শেয়ার করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, নবরাত্রি বিশুদ্ধ ভক্তির উৎসব, এবং সংগীতের মাধ্যমে এই ভক্তিকে অনেকেই ফুটিয়ে তোলেন।