ব্যুরো নিউজ ৭ জুলাই: ঋতুচক্রের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি হরমোনের ওঠানামার উপর নির্ভর করে। ঋতুস্রাব শুরুর আগেই জরায়ুর পেশিতে সঙ্কোচন-প্রসারণ শুরু হয়, ফলে শরীরে প্রদাহ বাড়ে এবং ব্যথা অনুভূত হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই অবস্থাকে বলা হয় ‘ডিসমেনোরিয়া’। অনেক মহিলাই এই সময়ে কোমর, হাঁটু কিংবা পায়ের গাঁটে ব্যথার অভিযোগ করেন। এর প্রভাবে হাঁটাচলা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজেও সমস্যা হয়।
ব্যথার ওষুধ নয়, পাতে আনুন সঠিক খাবার
প্রতি মাসে ব্যথার ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়, কারণ এতে হতে পারে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। তাই চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন, সঠিক ডায়েট মেনেই যেন শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখা হয়। বিশেষ করে এই সময়ে আয়রন, ফাইবার, প্রোটিন এবং ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার অনেক উপকার করে।
ঋতুস্রাবের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের ডায়েট প্ল্যান:
এই সময়ে ব্যথা বেশি হয়। তাই হালকা ও সহজপাচ্য খাবারই উপযুক্ত।
সকাল: ওটমিল বা ডালিয়া (বাদাম ও ফল মিশিয়ে), সিদ্ধ ডিম, রুটি-সবজি।
দুপুর: অল্প ভাত বা রুটি, ডাল, সবুজ শাকসবজি, ছোট মাছ বা চিকেন স্ট্যু।
বিকেল: কলা, আপেল, বাদাম ও এক বাটি দই।
রাত: হালকা খিচুড়ি বা সবজির স্যুপ।
ব্যথা কমাতে আদা দেওয়া লাল চা বা গ্রিন টি খেতে পারেন। ডার্ক চকোলেটও কার্যকর। এছাড়া হলুদ খেলে জরায়ুতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং ইস্ট্রোজেনের ঘাটতি পূরণ হয়।
তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম দিনের পুষ্টিকর খাবার তালিকা
এই সময়ে আয়রন ও প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে মনোযোগ দেওয়া দরকার।
প্রাতরাশ: ওটসের রুটি ও সবজি, পোহা, উপমা বা রাগির দোসা।
দুপুর: ভাত বা রুটি, ডাল, কম তেলে রান্না মাছ বা মাংস, টক দই।
বিকেল: ফলের স্যালাড অথবা একমুঠো বাদাম।
রাত: হালকা খাবার। সকালে মাছ বা মাংস খেলে রাতে রুটি-সবজি বা চিকেন স্ট্যু খাওয়া ভালো।
পুষ্টিকর উপাদানগুলো রাখুন পাতে:
ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার যেমন পালংশাক, কলা, কাঠবাদাম, ডার্ক চকোলেট শরীরকে ব্যথার বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। বাদাম ও নানা রকম বীজ পুষ্টির ঘাটতি পূরণে দারুণ কাজ করে।
হাইড্রেশন ভীষণ জরুরি:
ঋতুস্রাবের সময়ে শরীর থেকে জল বেশি পরিমাণে বেরিয়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত জল পান করুন। প্রতিদিন টাটকা ফলের রস ও সবজির স্যুপ রাখলে শরীর থাকবে সতেজ।
ঋতুস্রাবের দিনগুলো অস্বস্তিকর হলেও, সঠিক ডায়েট মেনে চললে শরীর ও মন—দুটোই থাকবে অনেকটা হালকা। নিয়মিত ব্যায়াম, বিশ্রাম ও পুষ্টিকর খাবার মিলিয়ে তৈরি করুন এক স্বাস্থ্যকর রুটিন।