ছবিগুলি শুধুমাত্র প্রতীকী
ব্যুরো নিউজ ২৩ মে : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘X’-এ প্রচারিত একটি বিস্তারিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন পাকিস্তান বিমান বাহিনীর (PAF) ব্যাপক কৌশলগত এবং আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই সামরিক অভিযানটি ২০২৫ সালের ৭ মে পরিচালিত হয়েছিল বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। এই অভিযানে পাকিস্তান অন্তত ৮টি F-16 এবং ৪টি JF-17 যুদ্ধবিমান হারিয়েছে, যার পাশাপাশি আরও অনেক উচ্চমূল্যের আকাশ ও স্থল সম্পদ ধ্বংস হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ
ক্রস-ভেরিফাইড স্যাটেলাইট ইমেজ, আইএসআর (গোয়েন্দা, নজরদারি এবং রিকনেসান্স) ডেটা এবং শ্রেণীবদ্ধ বাজেট টেন্ডারের ভিত্তিতে পরিচালিত এই অভিযানের মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৩.৩৫৭৩২ বিলিয়ন ডলার বলে অনুমান করা হয়েছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, ওপেন-সোর্স ইন্টেলিজেন্স, বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট ইমেজ এবং বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণ সহ একাধিক স্বাধীন উৎস ব্যবহার করে পাকিস্তানের ক্ষতির একটি উচ্চ-আত্মবিশ্বাসের মূল্যায়ন করা হয়েছে।
আকাশপথে সরাসরি যুদ্ধের ক্ষতি
রিপোর্টে সরাসরি যুদ্ধের ক্ষতির বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আকাশপথে সংঘর্ষে চারটি F-16 ব্লক 52D যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে, যার প্রতিটির মূল্য প্রায় ৮৭.৩৮ মিলিয়ন ডলার। F-16.net থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই চারটি বিমানের মোট ক্ষতি ৩৪৯.৫২ মিলিয়ন ডলার।
এছাড়াও, ৯৩ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি সাব ২০০০ এরিআই (Saab 2000 Erieye) এয়ারবোর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল (AEW&C) বিমান ধ্বংস হয়েছে, যা প্রতিরক্ষা পোর্টাল Quwa.org দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে। আকাশপথে অতিরিক্ত ক্ষতির মধ্যে রয়েছে ৩৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি IL-78 রিফুয়েলিং ট্যাঙ্কার (সূত্র: OvertDefence), ৩.২ মিলিয়ন ডলার মূল্যের দুটি CM-400AKG ক্ষেপণাস্ত্র (সূত্র: TheAsiaLive), ৮ মিলিয়ন ডলার মূল্যের দুটি শাহীন-শ্রেণির ক্ষেপণাস্ত্র (সূত্র: Missile Threat – CSIS), এবং ৩৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ছয়টি Bayraktar TB2 মানববিহীন যুদ্ধ বিমান (UCAVs) (সূত্র: France24)। শুধুমাত্র আকাশপথের ক্ষতির আনুমানিক মূল্য ৫২৪.৭২ মিলিয়ন ডলার।
স্থলভাগে ভারতীয় হামলার ক্ষতি
স্থলভাগে ভারতীয় বাহিনীর সুনির্দিষ্ট হামলায় পাকিস্তান বিমান বাহিনীর আরও ক্ষতি হয়েছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, মাটিতে থাকা আরও চারটি F-16 ব্লক 52D জেট ধ্বংস হয়েছে, যার ফলে ৩৪৯.৫২ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
একটি ৪০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের C-130H হারকিউলিস পরিবহন বিমানও ধ্বংস হয়েছে (সূত্র: AF.mil)। উপরন্তু, ২০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি HQ-9 সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারি (আর্মি রিকগনিশন দ্বারা যাচাইকৃত) এবং ১০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের দুটি মোবাইল কমান্ড সেন্টারও ধ্বংস করা হয়েছে (সূত্র: Airbus – NATO Deployable Systems)। স্থলভাগের ক্ষতির মোট আর্থিক প্রভাব ৫৯৯.৫২ মিলিয়ন ডলার, যা আকাশ ও স্থল উভয় ক্ষেত্রে মোট ক্ষতির পরিমাণ ১.১২২৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
কার্যনির্বাহী ব্যয় এবং অবকাঠামোগত ক্ষতি
রিপোর্টে সংঘর্ষের সময় পাকিস্তানের বিস্তৃত কার্যনির্বাহী ব্যয়ও তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২৯ দিনের সময়কালে F-16, JF-17 এবং ড্রোন ব্যবহার করে পরিচালিত যুদ্ধ বিমান টহল এবং স্ট্রাইক মিশনের জন্য প্রতিদিন প্রায় ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে, যার মোট পরিমাণ ৭২৫ মিলিয়ন ডলার। রা’আদ, বায়রাকটার এবং হাতফ যুদ্ধাস্ত্রের মোতায়েন সহ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র অভিযানে আরও ৪৫০ মিলিয়ন ডলার যোগ হয়েছে।
সীমান্ত মোতায়েন প্রচেষ্টা এবং সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র অভিযানে ২৯ দিনে প্রতিদিন আনুমানিক ১৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে, যার মোট পরিমাণ ৪৩৫ মিলিয়ন ডলার। সুতরাং, মোট কার্যনির্বাহী এবং প্রস্তুতি ব্যয় আনুমানিক ১.৬১ বিলিয়ন ডলার। এই আর্থিক চাপের সাথে মূল বিমান ঘাঁটিগুলির ব্যাপক ক্ষতির কারণে অবকাঠামো এবং মেরামত খরচও যোগ হয়েছে।
পিএএফ বেস নূরখানে, রিপোর্টে হ্যাঙ্গার, AEW&C শেল্টার এবং কন্ট্রোল সেন্টারগুলির ধ্বংসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যার আনুমানিক মেরামত খরচ ১২৫ মিলিয়ন ডলার (সূত্র: ইন্টেলিজেন্স অনলাইন, ফ্রান্স)। এদিকে, সারগোধার পিএএফ বেস মুশাফে F-16 বে, রাডার ইনস্টলেশন এবং কমান্ড অবকাঠামোর ক্ষতির মেরামত খরচ ১০০ মিলিয়ন ডলার হবে বলে আশা করা হচ্ছে (সূত্র: লে ফিগারো)। এই অবকাঠামোগত খরচ ‘অপারেশন সিঁদুর’ দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতির ব্যাপকতাকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
কৌশলগত প্রভাব
এই ক্ষতির কৌশলগত প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অভিযান পাকিস্তানের আকাশপথে যুদ্ধ ক্ষমতা, লজিস্টিক্যাল গভীরতা এবং রাডার অবকাঠামোকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করেছে। ধ্বংসের পরিমাণ, বিশেষত F-16 এবং অত্যাধুনিক নজরদারি প্ল্যাটফর্মগুলির ক্ষতি, এই অঞ্চলে পাকিস্তানের বিমান শক্তির জন্য একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।