ব্যুরো নিউজ,১৩ ফেব্রুয়ারি:মধ্যযুগের শুরু হয়েছিল ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দে, যখন রোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছিল। এই পতনের মধ্যে দিয়েই শুরু হয় নতুন একটি যুগ, যা ইতিহাসে ‘মধ্যযুগ’ নামে পরিচিত। ৪৯৬ খ্রিষ্টাব্দে, মধ্যযুগের প্রারম্ভের ২০ বছর পর, প্রথম ভ্যালেনটাইনস ডে উদযাপিত হয়। তবে এই দিনটির পেছনে রয়েছে একটি করুণ ইতিহাস, যা প্রেমের একটি অমর কাহিনী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
‘মাই ভ্যালেনটাইন’ ডাকার পেছনের হৃদয় বিদারক ইতিহাস জানুন
মৃত্যুর আগের শেষ বার্তা
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২৬৯ খ্রিষ্টাব্দে সেন্ট ভ্যালেনটাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এই দিনেই তার জীবন শেষ হয়। সেন্ট ভ্যালেনটাইন ছিল একজন ধর্মীয় পাদ্রি, যিনি রোমে খ্রিষ্টধর্ম প্রচার করতেন। কিন্তু রোমের শাসক ক্লডিয়াস যখন খ্রিষ্টধর্মের প্রচার নিষিদ্ধ করেন, তখন সেন্ট ভ্যালেনটাইন গোপনে খ্রিষ্টধর্মের প্রচার চালান। এর ফলে তাকে কারাবন্দী করা হয়। কারাবন্দী অবস্থায়, সেন্ট ভ্যালেনটাইন প্রেমে পড়েন কারাপ্রধানের মেয়ের সঙ্গে। মৃত্যুদণ্ডের আগে তিনি প্রেমিকা-কে একটি চিঠি লেখেন, যেখানে তিনি লিখেছিলেন, “তোমার ভ্যালেনটাইনের পক্ষ থেকে”। এটি ছিল তাঁর মৃত্যুর আগের শেষ বার্তা।
এই ঘটনা ঘটার পর প্রায় দুই শতাব্দী কেটে যায়, তার পর ১৪ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুর দিনটিকে স্মরণ করে ভ্যালেনটাইনস ডে উদযাপন শুরু হয়। তবে রোমে ভ্যালেনটাইনস ডে উদযাপন ছিল এক প্রাচীন প্রথা, যা লুপারকালিয়া উৎসবের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এই উৎসব বসন্তের মাঝামাঝি সময়ে, ১৪ বা ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতো। লুপারকালিয়া উৎসবে তরুণ-তরুণীরা অংশ নিত। এই উৎসবে তরুণদের একটি বাক্স থেকে কাগজের চিরকুট বাছাই করতে হতো, যেখানে একটি মেয়ের নাম লেখা থাকত। এরপর তরুণ-তরুণী ওই দিন একসঙ্গে সময় কাটাতেন, এবং তারা পরে বিয়ে করতেন।
সেন্ট ভ্যালেনটাইন এর মৃত্যুর পর, লুপারকালিয়া উৎসবের সঙ্গে ভ্যালেনটাইনস ডে যোগ হয়ে যায়। সেন্ট ভ্যালেনটাইনকে স্মরণ করতে এবং প্রেমের দিন হিসেবে ১৪ ফেব্রুয়ারি উদযাপিত হতে থাকে। এখন, এই দিনটি বিশ্বজুড়ে প্রেমিক-প্রেমিকারা একে অপরকে ভালোবাসার প্রমাণ স্বরূপ উপহার ও চিঠি দিয়ে থাকে।তবে, ভ্যালেনটাইনস ডে-এর পেছনে থাকা এই ইতিহাসের কথা জানলে, এই প্রেমের দিনটি আরও বিশেষ এবং অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে।