ব্যুরো নিউজ ,৭ মে: মঙ্গলবার গভীর রাতে ইতিহাস গড়ল ভারতীয় সেনা। মাত্র ২৫ মিনিটে ২৪ বার স্ট্রাইক করে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করল তারা। এই গোপন অভিযানের নাম— ‘অপারেশন সিঁদুর’। সরকারি সূত্রের দাবি, এই অপারেশনে অন্তত ৭০ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। যদিও ভারত সরকার এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে এই জায়গাতে
অন্যদিকে পাকিস্তান সেনার আইএসপিআর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরি দাবি করেছেন, হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে শিশু ও নারীও। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পাক পঞ্জাবের বহাওয়ালপুরের আহমেদপুর ইস্ট এলাকায়।
গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় বাহিনী যে ৯টি জায়গায় আঘাত হেনেছে তার মধ্যে ৪টি পাকিস্তানের মাটিতে এবং ৫টি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। বহাওয়ালপুর, মুরিদকে, সিয়ালকোট ও কোটলিতে বড়সড় হামলা হয়েছে। অন্যদিকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদ, গুলপুর, ভীমবের, চাক আমরু ও বাগেও ধ্বংসাত্মক স্ট্রাইক চালানো হয়।
এই অপারেশন সফল করার পেছনে ছিল ভারতের গোপন গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ ভূমিকা। উন্নত প্রযুক্তি এবং বহু তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে এই ৯টি টার্গেট চিহ্নিত করা হয়। সেই অনুযায়ী সেনাবাহিনী তোড়জোড় শুরু করে। গভীর রাতে ১টা ৫ মিনিটে শুরু হয় স্ট্রাইক, আর ২৫ মিনিটের মধ্যেই সব টার্গেট ধ্বংস হয়।
এই হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে স্ক্যাল্প এবং হ্যামার মিসাইলের মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র। এর ফলে নিখুঁতভাবে লক্ষ্যভেদ করে জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম) এবং লশকর-এ-তৈবা (এলইটি)-র ঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সরকারি সূত্র জানায়, বহাওয়ালপুরের উপকণ্ঠে এনএইচ-৫ হাইওয়ের কাছে ছিল জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান প্রশিক্ষণ ও প্রচার কেন্দ্র। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার মূলচক্রীরাই এখান থেকে পরিচালিত হতো। এবার সেই ঘাঁটিই টার্গেট করেছে ভারত।
বিশেষ সূত্রের খবর, জইশ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ সদস্যও এই হামলায় মারা গেছেন। পাকিস্তানের মুরিদকে শহরে, যা লশকর-এ-তৈবার শক্ত ঘাঁটি, সেখানেও নিশানা করেছে ভারতীয় সেনা। এখানেই ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদ থাকত।
পাক সেনার দাবি, ভারতের কোনও যুদ্ধবিমান তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি, তবে হামলার প্রভাব তারা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে।এই অপারেশন সিঁদুর স্পষ্ট করে দিল, সীমান্তের ওপারে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর আর নিরাপদ নয়। ভারতীয় সেনার এই ঝটিকা আঘাতে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো বড় ধাক্কা খেল বলে মনে করছে প্রতিরক্ষা মহল।