ব্যুরো নিউজ ২০ জুন : উত্তরবঙ্গের বিপদসঙ্কুল পাহাড়ি ভূখণ্ডে ফের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের থাবা। একটানা ভারী বর্ষণের ফলে শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং ও সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক একাধিক স্থানে ধসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ছে বড় বড় পাথর ও মাটির চাঁই, যার জেরে যান চলাচল কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেছে। এমনিতেই উত্তর সিকিম ও সিকিমের অন্যান্য অংশ সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত, তার উপর এই নতুন ধস পর্যটক ও স্থানীয়দের চরম বিপাকে ফেলেছে।
ভয়াবহ দশ নম্বর জাতীয় সড়কের চিত্র
বুধবার রাত থেকে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলে টানা ভারী বর্ষণের ফলে পরিস্থিতি বিপর্যয়কর রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের যে ছবি সামনে এসেছে, তা রীতিমতো ভয়াবহ। পাহাড় থেকে মুহুর্মুহু ভারী পাথর নেমে আসছে, যা সড়কের বহু অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। লিকুভিরের কাছে পাথর পড়া যেন থামতেই চাইছে না। এই পরিস্থিতিতে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে যান চলাচল কার্যত থমকে গেছে।
খারাপ আবহাওয়ায় সিকিম যাওয়া হল না, ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রীযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ও ঝুঁকি
কালিম্পং ও সিকিমের সঙ্গে সংযোগকারী এই প্রধান সড়কে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কালিম্পং পুলিশ সুপারের দফতর থেকে প্রকাশিত এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, “বহু জায়গায় রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত। লিকুভিরের কাছে প্রতিনিয়ত পাথর পড়ছে। সেই কারণে সমস্ত যান নিয়ন্ত্রণ করে চালানো হচ্ছে।”
বর্তমানে যে গাড়িগুলো সিকিম বা কালিম্পং-এর দিকে রওনা দিচ্ছে, সেগুলোর যাত্রা অত্যন্ত ঝুঁকিবহুল। যেকোনো সময় গাড়ির ওপর পাহাড়ি বোল্ডার ভেঙে পড়তে পারে, কিংবা ভেঙে পড়া রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঝুঁকিও নেহাত কম নয়। মেল্লি ও কিরনের মধ্যবর্তী রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানেও ভারী যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। লিকুভির এলাকায় অনবরত নেমে আসছে পাথর ও মাটির চাঁই। এই কারণে ওই অঞ্চলেও ট্র্যাফিক পুলিশ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে এবং পরিস্থিতি দেখে গাড়ি পার করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
গরমে শান্তির ঠিকানা: দার্জিলিঙের মনোরম লেক ও ঝরনার হাতছানি!
পর্যটক ও স্থানীয়দের ভোগান্তি
কালিম্পং যাওয়ার কিছু বিকল্প রাস্তা থাকলেও, সিকিম যাওয়ার ক্ষেত্রে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কই প্রধান রুট। এই সড়কের বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে দীর্ঘ ঘুরপথে যাত্রা এবং অতিরিক্ত সময়। এমনিতেই উত্তর সিকিম ও সিকিমের অন্যান্য অংশে সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত, তার উপর প্রধান সড়কে ধস নামায় পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়দের দৈনন্দিন জীবনও ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে জনজীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।