ব্যুরো নিউজ ০১ জুলাই : সাতসকালে রীতিমতো বিস্ফোরক চেহারা নিল মুর্শিদাবাদের নওদার আলিনগরের পারিবারিক বিবাদ। জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের গন্ডগোলের জেরে চাচাতো ভাইদের সঙ্গে তীব্র বচসা থেকে শুরু হয় বোমাবাজি— যার জেরে প্রাণ হারালেন ৫০ বছরের আফিকুল শেখ। পুলিস সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালবেলা বিবাদের এক পর্যায়ে দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে একাধিক বোমা ছোড়ে। বোমার আঘাতে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন আফিকুল, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
এই বোমা বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পুলিস ঘটনার খবর পেয়েও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকী, বেলা ১১টা পর্যন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয় পুলিস, যার জেরে নওদা থানার পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ক্ষুব্ধ জনতা। তাঁদের অভিযোগ, বহুদিন ধরেই জমি সংক্রান্ত এই বিবাদ চলছিল, অথচ বারবার জানানো সত্ত্বেও প্রশাসন কোনও সক্রিয় ব্যবস্থা নেয়নি।
বিক্ষোভের মুখে পরে বিশাল পুলিস বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শুরু হয়েছে দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারির অভিযান। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শুধু গ্রেফতার নয়, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এমন হিংসাত্মক ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে জন্য প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এই ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলে দিল গ্রামবাংলায় বাড়তে থাকা পারিবারিক হিংসা ও জমি বিবাদের উপর। কোথাও সামান্য তর্ক-বিতর্ক, আবার কোথাও চরম হিংসার রূপ নিচ্ছে সম্পত্তি নিয়ে সংঘাত। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক ছত্রছায়ার অভিযোগ এই ধরনের অপরাধে ইন্ধন জোগাচ্ছে কি না, তা নিয়েও শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
এই মুহূর্তে গোটা নওদা থমথমে। গ্রামে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। মৃতের পরিবারের দাবি, অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে তাদের কড়া শাস্তি দিতে হবে, নাহলে তাঁরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবেন। পুলিস জানিয়েছে, গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি, তবে খুব শিগগিরই অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
সম্পত্তির জন্য খুনের এই ঘটনায় ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে গ্রামীণ জমি বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা ও দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ। নইলে এমন ‘ঘরোয়া’ বিবাদ থেকেই আবারও হিংসায় রঙ লেগে উঠতে পারে রাজ্যের অন্যত্রও।



















