ব্যুরো নিউজ,১৯ এপ্রিল: মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদে সাম্প্রতিক অশান্তির আবহে নিহত এক বৃদ্ধ এবং তাঁর ছেলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শনিবার রাজ্যপাল সেখানে পৌঁছনোর পর হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল গোটা এলাকা। নিহত বৃদ্ধের স্ত্রী রাজ্যপালের পা জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্নার মধ্যেই বলেন, “আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমরা ঘুমোতে পারছি না, আপনি কিছু করুন।” এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তুলে দেন ‘শান্তিকক্ষ’-এর ফোন নম্বর, যেখানে সরাসরি ফোন করে নিরাপত্তা এবং আইনি সহায়তার আবেদন করা যাবে। তিনি বলেন, “এলাকায় ফের শান্তি ফিরিয়ে আনা হবে। কারও যেন নিরাপত্তার অভাব না হয়, সে দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুদিন অপেক্ষার অনুরোধ,শুনলেন না কেন রাজ্যপাল?
স্থানীয়দের সঙ্গে কথোপকথন, দাবি উঠল স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্পের
মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ, সুতি ও ধুলিয়ানের বহু মানুষ নয়া ওয়াকফ আইন ঘিরে অশান্তির জেরে গঙ্গা পেরিয়ে মালদহে আশ্রয় নিয়েছেন। শুক্রবার তাঁদের শিবির পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল। পরদিন শনিবার তিনি সরাসরি উপদ্রুত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যান এবং নিহতদের পরিজন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।
নিহতের পরিবার জানান, অশান্তির সময় তাঁদের বাড়িতে লুটপাট চলে। আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের। তাঁরা নিরাপত্তার স্বার্থে এলাকায় স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প চেয়ে আবেদন জানান। এই দাবি আরও জোরদার হয় যখন জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরাও তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন। মহিলাদের একাংশ তাঁদের পা জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কমিশনের এক সদস্য জানান, “কেন্দ্রীয় সরকার ও বিএসএফ আপনাদের পাশে আছে। আপনাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।” এই ঘটনার জেরে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “অভিযোগ রয়েছে। রাজ্য সরকার যেন উপযুক্ত পদক্ষেপ করে, সেই অনুরোধ জানাচ্ছি।”
এদিকে, রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, জোড়া খুনে ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকার। রাজ্যপালের এই সফর এবং আশ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার কিছুটা ভরসা পেলেও, এলাকায় এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শান্তি ফেরাতে কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসনের সমন্বয়ে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা।