ব্যুরো নিউজ, ২২ ফেব্রুয়ারি: জন্ম থেকেই চলাফেরায় অক্ষম বছর আঠারোর মোরসালিন মণ্ডল। সে দুবড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মথুরগাছি এলাকার বাসিন্দা। তাঁর পরিবারের লোকেরা নানা জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাঁর চিকিৎসাও করিয়েছেন। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। তবে, নিজের অক্ষমতাকে শিক্ষার পথে বাঁধা হতে দেননি ওই তরুন। অদম্য জেদ নিয়ে চালিয়ে গিয়েছেন নিজের পড়াশোনা। আর তার সুফল, এই বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সে। তাঁর সিদ্ধান্তে সবসময় পাশে থেকেছে তাঁর বাব-মা।
উজবেকিস্তানে তুষারপাতে মৃত জেলার ২ পরিযায়ী শ্রমিক
হাঁটাচলায় অক্ষম হওয়ার কারণে বাবা ফজর আলি মণ্ডল পরীক্ষার দিনগুলিতে ছেলেকে কোলে করে পৌঁছে দিচ্ছেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। শুধু তাই নয়। পরীক্ষার শেষে ফের বাবার কোলে চড়েই বাড়ি ফিরছেন মোরসালিন।
চলাফেরায় অক্ষমতা হয়ে দাড়ায়নি পরীক্ষায় বাঁধা
মোরসালিনের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছে চাকদহ ব্লকের শিলিন্দা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিয়া হাইস্কুলে।
মোরসালিনের বাবা ফজর আলি বলেন, “ছেলের কোমরের নীচের অংশ খুবই দুর্বল। জন্ম থেকেই হাঁটতে চলতে সে অক্ষম। দাঁড়াতেও পারেনা। শুধু বসতে পারে। জমি বিক্রি করে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করানো হয়েছে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। এখনো সে হাঁটতে পারেনা। কিন্তু তাই বলে কী পরীক্ষা বন্ধ থাকবে? তাই পরীক্ষার আগে স্কুলে পৌঁছে দিই ও পরীক্ষার শেষে কোলে করে বাড়ি নিয়ে যাই। বিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষিকারা এতে আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন”।
মোরসালিন নিজে জানিয়েছে, তাঁর পরীক্ষা দিতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না। এমনকি তাঁর পরীক্ষাও ভালো হচ্ছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষিকারাও তাঁকে সাহায্য করেন। বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশীতাভ ভট্টাচার্য বলেন, “মোরসালিন পঞ্চম শ্রেণি থেকে আমাদের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। ওর শারীরিক সমস্যা থাকলেও মানসিক দিক দিয়ে ও খুবই শক্ত। ওর যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেদিকে আমরা নজর রেখেছি”। এই বিষয়ে বালিয়া হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক পুষ্পরাজ সরকার জানান, ছেলেটি যাতে আলাদা ঘরে পরীক্ষা দিতে পারে তার ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি সে। বর্তমানে অন্যদের সঙ্গে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে সে। ছেলেটির প্রচণ্ড মনের জোর। ইভিএম নিউজ