mathura 7 gates vision 2030

ব্যুরো নিউজ ২০ জুন : ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র জন্মভূমি মথুরাকে ‘মথুরা ভিশন ২০৩০’ প্রকল্পের আওতায় ব্যাপক সৌন্দর্যবর্ধন ও পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। মথুরা-বৃন্দাবন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছে, যার মধ্যে শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমিতে কেশব বাটিকার আধুনিকীকরণ, গোকুলে যমুনা ব্যারেজের কাছে বাসুদেব বাটিকা নির্মাণ এবং মথুরা জুড়ে সাতটি বিশাল প্রবেশদ্বার তৈরি করা হচ্ছে। এই উদ্যোগগুলিকে বাস্তবায়িত করতে প্রায় ৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

ধর্মীয় পর্যটনের নতুন দিগন্ত

মথুরা-বৃন্দাবন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, এই প্রকল্পগুলির মূল লক্ষ্য হলো মথুরার ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং পরিবেশগত ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করা। এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ভক্তদের জন্য একটি আরও মনোরম ও স্মরণীয় তীর্থযাত্রার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা হবে। প্রতি বছর বহু তীর্থযাত্রী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান এবং তাঁর লীলাভূমি মথুরা-বৃন্দাবনে আসেন। তাঁদের সুবিধার জন্য এবং এই অঞ্চলের আধ্যাত্মিক পরিবেশকে উন্নত করার লক্ষ্যে ‘মথুরা ভিশন ২০৩০’ কর্মসূচির অধীনে এই অঞ্চলকে সুচিন্তিতভাবে পুনর্গঠিত করা হচ্ছে।

প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কেন্দ্রের ঐতিহাসিক ঘোষণা: ১৫ জুন থেকে সারাদেশে বিনামূল্যে ভ্রমণের সুবিধা

সাতটি মহিমান্বিত প্রবেশদ্বার

এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে মথুরার সাতটি কৌশলগত স্থানে বিশাল প্রবেশদ্বার নির্মাণ করা হবে। স্থানগুলি হলো: রেপুরা জাট, যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে, পাগল বাবা মন্দির (বৃন্দাবন রোড), লক্ষ্মী নগর চৌরাহা, কোটভান বর্ডার, মথুরা-গোকুলা মার্গ, সোনাই বর্ডার এবং সাসনি বর্ডার। এই তোরণগুলি রাজস্থানী পাথরের সূক্ষ্ম খোদাই শৈলীতে ডিজাইন করা হবে এবং এতে ১২টি দশ ফুট উচ্চতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মূর্তি থাকবে। প্রায় ২১.৫০ কোটি টাকা বাজেট সহ এই গেটগুলি কেবল মথুরার সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয়কেই শক্তিশালী করবে না, বরং শহরের প্রাচীন গৌরবকেও পুনরুদ্ধার করবে এবং দর্শকদের জন্য একটি দর্শনীয় আকর্ষণ হয়ে উঠবে।

কেশব বাটিকা ও বাসুদেব বাটিকার উন্নয়ন

শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি কমপ্লেক্সে ৩.৫ একর জুড়ে বিস্তৃত কেশব বাটিকা একটি আধুনিক এবং আকর্ষণীয় রূপান্তর পাবে। ৭.৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা এই বাগানটিকে একটি মিউজিক্যাল ফাউন্টেন, ঝলমলে আলোকসজ্জা, পাথরের রেলিং, হাঁটার পথ, বসার বেঞ্চ এবং সবুজে ভরিয়ে তোলা হবে। এর কেন্দ্রবিন্দুতে ভাগবত ভবনে শ্রীকৃষ্ণের দিব্য লীলা প্রদর্শনকারী একটি চমকপ্রদ লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো থাকবে। এটি এই বছরের জন্মাষ্টমীর আগেই চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো ভক্তদের আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতাকে আরও গভীর করা এবং পর্যটকদের জন্য একটি অনন্য দর্শনীয় ও শ্রাব্য আকর্ষণ তৈরি করা।
এদিকে, যমুনা ব্যারেজের বাম তীরে ১৩ হেক্টর জায়গাজুড়ে বাসুদেব বাটিকা তৈরি করা হচ্ছে, যার বাজেট ৩৪.০৬ কোটি টাকা। এই বাগানে একটি প্রবেশদ্বার, প্রবেশ প্লাজা, একটি বাজার এলাকা, জলাধার, সবুজ স্থান, একটি অ্যাম্ফিথিয়েটার, হাঁটার পথ, কুটির, শৌচালয়, বৃক্ষরোপণ, আলোকসজ্জা এবং পার্কিং সুবিধা থাকবে। পরিবেশগত স্থায়িত্বের উপর জোর দিয়ে এই প্রকল্পে সৌর আলো এবং প্যানেল, ইন্টারলকিং টাইলস, থিমযুক্ত ম্যুরাল এবং একটি শক্তিশালী নিষ্কাশন ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তথ্যমূলক হোডিং এবং বিস্তৃত বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি একটি স্থানীয় ফুড স্ট্রিট তৈরির পরিকল্পনা দর্শকদের অভিজ্ঞতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘার অবমাননায় উত্তাল সিকিম !

ভবিষ্যতের মথুরা: ধারাবাহিক ধর্মীয় পর্যটনের মডেল

একত্রে, ‘মথুরা ভিশন ২০৩০’ এর অধীনে এই প্রকল্পগুলি গোকুল ব্যারেজ এলাকাকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্য রাখে, এটিকে টেকসই ধর্মীয় পর্যটনের একটি মডেল হিসেবে গড়ে তুলবে যা ভক্ত এবং পর্যটক উভয়ের জন্যই মথুরার আধ্যাত্মিক পরিকাঠামোকে সমৃদ্ধ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর