manisha koirala on nepal riots

ব্যুরো নিউজ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : নেপালে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে অভিনেত্রী মনীষা কৈরালার একটি পুরোনো ভিডিও অনলাইনে নতুন করে ভাইরাল হয়েছে। এই ভিডিওতে তাকে নেপালকে একটি ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ হিসেবে ফিরিয়ে আনার পক্ষে কথা বলতে শোনা যায়।
এই ভাইরাল ক্লিপটি দেশের ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ভিডিওতে মনীষা কৈরালাকে বলতে শোনা যায় যে, নেপাল ঐতিহাসিকভাবে একটি হিন্দু দেশ ছিল এবং এটি জাতির অবিচ্ছেদ্য পরিচয়ের অংশ।

 

ভাইরাল ভিডিওতে মনীষা কৈরালার মন্তব্য

এক্স প্ল্যাটফর্মে একজন ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন, “মনীষা কৈরালা কিছু দিন আগে নেপাল সম্পর্কে এই কথা বলেছিলেন।”
ক্লিপটিতে মনীষাকে বলতে শোনা যায়, “আমরা একটি হিন্দু রাষ্ট্র ছিলাম। এবং একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র, আমাদের সেরা পরিচয় হলো আমরা একটি হিন্দু রাষ্ট্র। আমাদের দেশে কখনও ধর্মের উপর ভিত্তি করে কোনো লড়াই হয়নি। এখানে কোনো যুদ্ধ, কোনো হত্যা, কোনো বিবাদ নেই। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ হিন্দু রাষ্ট্র ছিলাম, কোনো সংঘাত ছিল না। কেন এটি সরানো হলো? আমার মনে হয় এটি একটি ষড়যন্ত্র ছিল। রাজনৈতিক নেতারা এই পুরো বিষয়টি ব্যবহার করেছে।”
উল্লেখ্য, মনীষা কৈরালার এই সাক্ষাৎকারটি ২০২২ সালের নভেম্বরের, যা নেপালের সাধারণ নির্বাচনের ঠিক আগে নেওয়া হয়েছিল। সেই সময়েও তিনি দেশের ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তার বক্তব্য থেকে প্রকাশ পায় যে তিনি নেপালের ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থানের সমালোচনা করেছেন এবং হিন্দু পরিচয় ফিরিয়ে আনার কথা বলেছেন।

Nepal : সুশীলা কার্কীর মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে বিতর্ক: রাতভর বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী

দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে মনীষা কৈরালার সমর্থন

মনীষা কৈরালার এই পুরোনো সাক্ষাৎকারটি এমন এক সময়ে ভাইরাল হয়েছে, যখন নেপাল গুরুতর রাজনৈতিক সংকটে ভুগছে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে হাজার হাজার মানুষ দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছে, যেখানে বিক্ষোভকারীরা সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রাথমিকভাবে একটি সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ হিসেবে শুরু হলেও এই আন্দোলন দ্রুত একটি পূর্ণাঙ্গ দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। অভিনেত্রী মনীষা কৈরালার নেপালের সাথে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তার পিতামহ বিশ্বেশ্বর প্রসাদ কৈরালা নেপালের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সাম্প্রতিক এই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মনীষা সামাজিক মাধ্যমে তার অনুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

ইনস্টাগ্রামে একাধিক স্টোরি পোস্ট করে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান যে, বিক্ষোভটি মূলত দুর্নীতির বিরুদ্ধে, ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে নয়। সোমবার পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালালে কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হন। একটি রক্তাক্ত জুতোর ছবি পোস্ট করে মনীষা নেপালি ভাষায় লেখেন, “আজ নেপালের জন্য একটি কালো দিন — যখন মানুষের কণ্ঠস্বরের জবাবে বুলেট চলে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানানো হয়।”

কয়েক ঘণ্টা পর তিনি তার পিতামহের ছবি পোস্ট করে গণতন্ত্র নিয়ে তার কথা স্মরণ করেন। তিনি লেখেন, “বি.পি. কৈরালার জন্মদিনে তাকে স্মরণ করছি — নেপালের প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এবং একজন লেখক যিনি ভালোবাসা, সংঘাত এবং স্থিতিস্থাপকতাকে কণ্ঠ দিয়েছেন।”

Nepal : নেপালের ইতিহাসে প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োজিত হল । অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভায় কারা ?

প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং আন্দোলনের পরিস্থিতি

বিক্ষোভ যখন আরও বিশৃঙ্খল এবং বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, তখন ছাত্ররা জানতে পারে যে সরকার ২৬টি গুরুত্বপূর্ণ সোশ্যাল মিডিয়া সাইট নিষিদ্ধ করেছে। এই পদক্ষেপ আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করে এবং সহিংসতা আরও বেড়ে যায়। এর ফলে রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পৌডেল দেশের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন এবং সরকার সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বিক্ষোভ চলাকালীন অলির বাড়িসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর বাড়িতেও হামলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর