ব্যুরো নিউজ ১৭ জুন : ‘কবুতর জা জা জা…’ এই সুর কানে এলেই নব্বই দশকের নস্টালজিয়ায় ভেসে যাননি এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া কঠিন। সলমন খান এবং ভাগ্যশ্রীর অনবদ্য রসায়নে ভর করে ১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ ছবিটি কেবল বক্স অফিসেই ঝড় তোলেনি, তৈরি করেছিল এক নতুন ইতিহাস। ছবিটি সলমন খানের সুপারস্টার হয়ে ওঠার পথের প্রথম ধাপ ছিল। তবে এই ব্লকবাস্টার ছবির অন্দরমহলের অনেক তথ্যই এতদিন ছিল অজানা। সম্প্রতি, ছবিতে ‘সীমা’ চরিত্রে অভিনয় করা অভিজ্ঞ অভিনেত্রী পরভীন দস্তুর সেইসব গোপন তথ্যের ওপর থেকে পর্দা সরিয়েছেন।
সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক সলমনের নয়, পেয়েছিলেন ভাগ্যশ্রী!
সাধারণত, বলিউডের বড় তারকাদের পারিশ্রমিক নিয়েই জল্পনা বেশি থাকে। ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’র ক্ষেত্রেও অনেকে হয়তো সলমন খানকেই সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা ভেবে এসেছেন। কিন্তু পরভীন দস্তুরের সাম্প্রতিক একটি পডকাস্টের মাধ্যমে সেই ধারণা বদলে গেছে। তিনি জানান, ছবিতে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন ভাগ্যশ্রী, যা ছিল ১.৫ লক্ষ টাকা। যেখানে পরভীন নিজে পেয়েছিলেন ২৫,০০০ টাকা। পরভীন আশ্চর্যের সুরে বলেন, “ভাগ্যশ্রী দেড় লাখ টাকা পেয়েছিল, আর আমরা সবাই বলেছিলাম ‘ওয়াও’।”
সানি দেওল ও রণদীপ হুডার ‘জাট’ কবে, কোন ওটিটিতে দেখবেন?
সলমন খানের প্রথম দিকের পারিশ্রমিক
সলমন খান নিজেও তাঁর কেরিয়ারের শুরুর দিকের পারিশ্রমিক নিয়ে কথা বলেছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রথম আয় ছিল মাত্র ৭৫ টাকা, যখন তিনি তাজ হোটেলে একটি অনুষ্ঠানে ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার হিসেবে কাজ করেছিলেন। এরপর ‘ক্যাম্পা কোলা’র বিজ্ঞাপনের জন্য তিনি ৭৫০ টাকা পান। আর তাঁর ডেবিউ ছবি ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’র জন্য প্রাথমিকভাবে পেয়েছিলেন ৩১,০০০ টাকা, যা পরে ৭৫,০০০ টাকায় উন্নীত হয়। অর্থাৎ, সলমন খানের প্রথম ছবির পারিশ্রমিক ভাগ্যশ্রীর পারিশ্রমিকের অনেক কম ছিল।
রাজশ্রী প্রোডাকশনের সততা ও পেশাদারিত্ব
পরভীন দস্তুর রাজশ্রী প্রোডাকশনের কাজের পদ্ধতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “রাজশ্রী প্রোডাকশন হাউস অভিনেতাদের খুব বেশি টাকা দিত না, কিন্তু আমাদের চেকগুলি সবসময় সময় মতো বাড়িতে আসত।” তিনি আরও যোগ করেন যে, মেকআপ রুম, খাবার সহ সব সুবিধা নিশ্চিত করা হতো। পরভীন জানান, যদিও তাঁরা হয়তো সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক দিতেন না, তবে তাঁর নিজের পারিশ্রমিক ২৫,০০০ টাকাকে সেই সময়ে বেশ উচ্চ বলে মনে করা হতো, কারণ অন্য অভিনেতাদের ১,০০০ বা ২,০০০ টাকা দেওয়া হতো।
প্রচুর ‘ফ্লপ’ এর পরেও ‘সুপারহিট’ ! বক্স অফিসে এইধরনের অনন্য রেকর্ড কার ?
১৯৮৯ সালের সর্বোচ্চ আয়কারী এই ছবিটি সলমনকে এক প্রজন্মের সুপারস্টারে পরিণত করলেও, ভাগ্যশ্রী তাঁর প্রথম ছবির পরেই অভিনয় থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এই ছবিটি আজও ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে আছে, এবং এর নেপথ্যের এই নতুন তথ্যগুলি দর্শকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’র মতো চিরস্মরণীয় ছবির এই অজানা কাহিনিগুলি ‘মেরে সওয়ালো কা জওয়াব দো….’ বলতে বাধ্য করে, তাই না?