ব্যুরো নিউজ,২৪ ফেব্রুয়ারি:প্রতি বছর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা অত্যন্ত আচার-অনুষ্ঠান এবং ধর্মীয় ভক্তিতে মহাশিবরাত্রি পালন করে থাকেন। এটি শিব ভক্তদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব, যেটি সাধারণত শিবের পুজো ও উপবাসের মাধ্যমে পালন করা হয়। পঞ্জিকা অনুযায়ী, এই বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার মহাশিবরাত্রি উদযাপন হবে। মহাশিবরাত্রি হল সেই বিশেষ দিন, যা শিব ও পার্বতীর বিয়ের দিন হিসেবেও পরিচিত।
মহাশিবরাত্রির পুজো ও ব্রত পালন একটি নির্দিষ্ট রীতি অনুসরণ করতে হয়। এই বিশেষ দিনে কীভাবে ব্রত পালন করবেন, তা জানুন নিচে:
মহাশিবরাত্রি ব্রত পালনের সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি কি জানুন
মহাশিবরাত্রির ব্রত পালনের প্রক্রিয়া
মহাশিবরাত্রির ব্রত শুরু হয় ভোর বেলা। এই দিনে প্রথমেই ঘুম থেকে উঠে, তিল মেশানো জল দিয়ে শরীর ও আত্মা শুদ্ধ করতে হয়। অনেকেই গঙ্গায় স্নান করতে যান, তবে এটি না পারলে অন্য কোনো পবিত্র নদীতে বা বাসায়ও স্নান করা যেতে পারে। স্নান শেষে উপবাসের সংকল্প নিতে হয় এবং এই উপবাস সারাদিন বজায় রাখতে হয়। পুজো ও ব্রত পালন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু খাওয়া উচিত নয়। তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ফলমূল বা দুধ খাওয়া যেতে পারে।
সারাদিন উপবাস থাকার পর সন্ধ্যায় শিবলিঙ্গে অভিষেক করতে যাওয়ার আগে আবারও স্নান সেরে, পবিত্র বসন পরিধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুদ্ধতার অন্যতম অংশ।
শিবরাত্রি ব্রত পালন বাড়িতে
যদি মন্দিরে যাওয়ার সুযোগ না থাকে, তবে বাড়িতেও ব্রত পালন করা যায়। বাড়িতে একটি মাটির শিবলিঙ্গ তৈরি করে তাতে ঘি লাগিয়ে পুজো শুরু করতে হয়। মহাশিবরাত্রিতে চার প্রহর ধরে পুজো হয়।
প্রথম প্রহরে শিবলিঙ্গে জল ঢালা হয়, দ্বিতীয় প্রহরে দই, তৃতীয় প্রহরে ঘি এবং চতুর্থ প্রহরে মধু দিয়ে অভিষেক করা হয়।
মহাশিবরাত্রি কেন পালন করা হয় জানেন? না জানলে জেনে নিন
পুজোর সময় ব্যবহার করা ফুল ও উপকরণ
মহাশিবরাত্রির পুজোতে কিছু বিশেষ ফুল ও উপকরণ ব্যবহার করতে হয়। অপরাজিতা, ধুতরা, আকন্দ ফুল, বেল পাতা, গোলাপ জল এবং চন্দন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুজো শেষে শিবলিঙ্গে বেলপাতার মালা পরানো হয়, কারণ শিবের পুজোর জন্য বেল পাতা অত্যন্ত পবিত্র। এর পর কুমকুম ও চন্দন মাখিয়ে ধূপ জ্বালাতে হয়। এরপর আকন্দ ফুল দিয়ে শিবকে তুষ্ট করা হয়।
প্রস্তুতি
মহাশিবরাত্রি পালন করার আগের দিন একবার ভালোভাবে খাবার খেয়ে নিতে হবে। এর মাধ্যমে শরীর প্রস্তুত হয় এবং উপবাসের সময় কোনো ধরনের অসুবিধা হবে না।
মহাশিবরাত্রির ব্রত পালন মানুষের জন্য একটি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা তৈরি করে, যা শিবের প্রতি গভীর ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রকাশের একটি সুন্দর উপায়। সঠিকভাবে পালন করলে এটি আধ্যাত্মিক উন্নতি ও শান্তি এনে দেয়।