শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে লিভার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যখন লিভার সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন শরীরের অন্যান্য অংশও খারাপভাবে প্রভাবিত হয়। শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেই নয়, শিশুদের মধ্যেও লিভারের রোগ দ্রুত বাড়ছে। জীবনযাত্রার অবনতি শিশুদের লিভারের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে। শিশুদের মধ্যে লিভারের রোগ বৃদ্ধির পেছনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। শিশুদের মধ্যে লিভারের রোগ এবং এর লক্ষণগুলো শুরুতে শনাক্ত করা গেলে, সময়মত চিকিৎসা এবং প্রতিকার সম্ভব।
দিল্লির ম্যাক্স হাসপাতালের প্রবীণ শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ প্রভাত ভূষণ বলেছেন, ” আজকাল শিশুদের মধ্যে লিভারের রোগ বাড়ছে। তবে এতে একটি নতুন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে: সংক্রমণ কমছে এবং জীবনযাত্রার সাথে সম্পর্কিত রোগ বাড়ছে। আগে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বেশি হতো। উদাহরণস্বরূপ, আগে লিভার সিরোসিস খুবই সাধারণ ছিল, কিন্তু এখন এর ঘটনা অনেক কমে গেছে। আজকাল শিশুদের মধ্যেও দীর্ঘস্থায়ী লিভারের রোগ দেখা যাচ্ছে। এতে মূলত বিপাকজনিত ব্যাধি (উইলসন রোগ), বিলিয়ারি অ্যাট্রেসিয়া এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হতে শুরু করেছে। হেপাটাইটিস এ এখনও শিশুদের মধ্যে, বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে সাধারণ। এটি লিভার ফেইলিউরের প্রধান কারণ। হেপাটাইটিসের টিকা নেওয়ার মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা যায়।”
শিশুদের মধ্যে লিভার রোগের লক্ষণ:
- জন্ডিস (ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া)
- পেটে ব্যথা বা ফোলাভাব
- ক্লান্ত লাগা
- খিদে কমা
- বমি বমি ভাব এবং বমি
- গাঢ় রঙের প্রস্রাব বা ফ্যাকাশে মল
- শিশুদের মধ্যে ফ্যাটি লিভার রোগ
ডাক্তার আরও যোগ করেছেন, ” আজকাল শিশুদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বেশি । শিশুদের মধ্যে মোটাভাবের কারণ হল কম শারীরিক শ্রম, বসে থাকার অভ্যাস এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। যার কারণে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হতে শুরু করেছে। এছাড়াও, উইলসন রোগও বেশ সাধারণ হয়ে উঠেছে। এই রোগ কিছু জিনগত কারণেও হয়। এর জন্য শিশুদের সময়মতো হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি টিকা দিন। শৈশবে এবং জন্মের পর শিশুদের মেটাবলিক স্ক্রিনিং করার মাধ্যমে, জন্মগত রোগ এড়ানো সম্ভব।”