শর্মিলা চন্দ্র, ৪ মে: মান অভিমানের পালা কি এবার শেষ হতে চলেছে? রাজনীতির অন্দরে এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পর থেকে অপসারিত হওয়ার পর থেকেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে কুনাল ঘোষকে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কাউকেই তিনি ছাড়েননি। কুণাল ঘোষ পদ থেকে অপসারিত হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। সরাসরি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করে বলেন চাকরি দেওয়ার নামে যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে টাকা তুলছেন সেই খবর দলের কাছে আগেই ছিল। তাও দল কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কার্যত দলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে শোনা গিয়েছিল কুণাল ঘোষকে। ফলে ক্রমশ বেকাদায় পড়ছিল শাসক শিবির। তবে শনিবার দুপুরে যা ঘটলো তাকে তৃণমূলের ড্যামেজ কন্ট্রোল করা বললেও হয়তো ভুল হবে না। এদিন দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ‘মধ্যস্থতায়’ ডেরেক ও ব্রায়েনের বাসভবনে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেছেন কুণাল ঘোষ। আর এই বৈঠককে কেন্দ্র করে কার্যত উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
ভোট প্রচারের জন্য অন্তর্বর্তী জামিন পাবেন কেজরীওয়াল?
তিনজনের বৈঠককে কেন্দ্র করে বাড়ছে জল্পনা
তবে কি এবার বরফ গলবে? অভিমান কমবে কুণাল ঘোষের? তবে কি এবার হারানো পদ ফিরে পেতে চলেছেন কুণাল ঘোষ? এখন রাজনীতির অন্দরে এই প্রশ্নগুলোই উঠছে। এদিন বৈঠক সেরে বেরোনোর পর কুণাল ঘোষ যে গান করলেন তাতে খানিকটা ইতিবাচক ইঙ্গেতে মিলছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। ‘আহা কী আনন্দ আকাশে-বাতাসে।’ তবে পথ হারানোর পর কুণাল ঘোষের গলায় কিন্তু সোনা গিয়েছিল অন্য গান। সেদিন তিনি গুনগুন করে উঠেছিলেন, ‘কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়, ও ভাইরে…’।
তবে আজকের বৈঠকের পর কুণাল ঘোষ যে গানটি করলেন তা বেশ ইঙ্গিত পূর্ণ বলে মনে করছেন ওয়াকিবহল মহল। অন্যদিকে এদিন বৈঠক থেকে বেরোনোর পর আরো একবার স্পষ্ট করে দেন, ‘তৃণমূলে ছিলাম, আছি, থাকব।’ এদিন বৈঠক থেকে বেরোনোর পর সাংবাদিকদের কুণাল ঘোষ বলেন, ‘কিছু আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে কী হয়েছে তা মিডিয়ার সামনে বলব না। তবে বাকিটা কী হয়, দেখতে থাকুন।’ তবে পদ ফিরে পাবেন কিনা এ বিষয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘পদ গৌণ, ভালোবাসাটাই মূল’
তবে এই বৈঠককে কোনোভাবেই মধ্যস্থতা বলতে নারাজ শিক্ষামন্ত্রীর ব্রাত্য বসু। তাঁর দাবি, ‘আমি একটা তৃণমূলের লোক, আরেকটা তৃণমূলের লোককে নিয়ে আরেকজন তৃণমূলের লোকের বাড়িতে এসেছিলাম। এটা নিয়ে এতো হাইপের কি আছে? ভোটের রণনীতি নিয়ে কথা হয়েছে। সব তো প্রকাশ্যে বলা যায় না।’
তবে কুণাল ঘোষকে নিয়ে এদিনে বৈঠকের পর রাজনৈতিক মহলের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন তবে কি ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেই কুণাল ঘোষকে নিয়ে বৈঠক করলেন ব্রাত্য বসু, ডেরেক ও ব্রায়েন? কারণ পথ থেকে অপসারিত হওয়ার পর থেকেই কুণাল ঘোষ একের পর এক ইস্যুতে যেভাবে মুখ ছিলেন তাতে ভোটের বাজারে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ছিল বলেই তৃণমূল শিবিরের, মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। আর সেই কারণেই হয়তো কুণাল ঘোষের মুখ বন্ধ করতেই তড়িঘড়ি এই বৈঠকের আয়োজন।