ব্যুরো নিউজ ৫ জুন : খাস কলকাতায় এক পুলিশকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। গত ৯ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর বুধবার (৪ জুন, ২০২৫) ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে তাঁর পচাগলা ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হলেও, পুলিশ প্রাথমিকভাবে খুনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানানো হয়েছে।
নিখোঁজ থেকে উদ্ধার: ঘটনার বিস্তারিত
মৃত পুলিশ কনস্টেবলের নাম সুখলাল মুর্মু। তিনি পুরুলিয়ার মানবাজারের পেদ্দা হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা। কলকাতা পুলিশের চতুর্থ ব্যাটেলিয়নে কর্মরত ছিলেন এবং সম্প্রতি তাঁকে চতুর্থ থেকে তৃতীয় ব্যাটেলিয়নে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। গত ২৮ মে থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন, যার পর তাঁর নামে থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ বডিগার্ড লাইন্স এলাকার একটি বাড়ির পাঁচ তলার সিঁড়ির জানলা থেকে সুখলালের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, গলায় গামছা পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে, দেহের পচন ধরে যাওয়ায় মৃত্যুর সঠিক সময় ও কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে
সুইসাইড নোট ও শারীরিক অসুস্থতা
ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও নোটের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি, তবে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুখলাল মুর্মু একটি দুর্ঘটনায় তাঁর বাঁ হাতে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন। এই আঘাতের পর থেকেই তিনি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই অবসাদই তাঁকে চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে থাকতে পারে।
খুনের সম্ভাবনা ও তদন্তের গতিপ্রকৃতি
দেহ উদ্ধারের পর থেকেই পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার অনুমান করা হচ্ছে, তবে পুলিশ সূত্রের খবর, রহস্যজনক এই মৃত্যুর পেছনে খুনের সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। দেহের পচন এবং ঘটনাস্থলের পারিপার্শ্বিকতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে আসার পরই এই বিষয়ে আরও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাবে। কলকাতা পুলিশ এই ঘটনার প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখছে এবং প্রয়োজনে আরও গভীরে তদন্ত করা হবে।
কলকাতা পুলিশের সাম্প্রতিক বিতর্ক ও রদবদল
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতা পুলিশ বেশ কিছু বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছে। এন্টালিতে ট্যাক্সি থামিয়ে ২.৬৬ কোটি টাকা লুঠের ঘটনায় এক পুলিশ কনস্টেবলের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও, হাওড়ার বাউরিয়ায় কুখ্যাত ‘ইরানি গ্যাং’-কে ধরার মতো ঘটনাও সামনে এসেছে। এই সকল ঘটনার আবহে পুলিশকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।