ব্যুরো নিউজ ৬ আগস্ট ২০২৫ : কেরালার ক্ষমতাসীন সিপিআই(এম)-এর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি রাজীব চন্দ্রশেখর। তিনি বলেছেন, কেরালার শাসন এখন গুন্ডা, দাগী অপরাধী এবং দোষী সাব্যস্ত আসামিদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। তিনি সিপিআই(এম)-এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং অপরাধীদের মহিমান্বিত করার অভিযোগ তুলেছেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ‘বীরোচিত’ বিদায়
রাজীব চন্দ্রশেখর ১৯৯৪ সালের রাজ্যসভার সাংসদ সি. সদানন্দন মাস্টারকে নৃশংসভাবে আক্রমণের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত আটজন সিপিআই(এম) কর্মীকে ‘বীরোচিত’ বিদায় জানানোর তীব্র নিন্দা করেছেন। সদানন্দন মাস্টারের হামলায় দুটো পা-ই কাটা গিয়েছিল। সিপিআই(এম) এই অপরাধীদের কারাগারে ফেরত যাওয়ার আগে থ্যালাসেরি আদালত চত্বর এবং কান্নুরের মাতানুরে একটি জনসমাবেশের আয়োজন করে। মাতানুরের বিধায়ক এবং প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে.কে. শৈলজা সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাজীব চন্দ্রশেখর এই ধরনের অপরাধকে মহিমান্বিত করার জন্য সিপিআই(এম)-কে লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেছেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দলীয় কর্মীরা আসামিদের সমর্থনে স্লোগান দিচ্ছে।
Kerala Nurse : হুথি জঙ্গি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনে কেরালার নার্সের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা !
TP চন্দ্রশেখরণ হত্যা মামলার আসামিদের প্রতি পুলিশের সহযোগিতা
বিজেপি সভাপতি টি.পি. চন্দ্রশেখরণ হত্যা মামলার আসামিদের প্রতি পুলিশের সহযোগিতার অভিযোগেও সরব হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ পাহারায় থাকা অবস্থাতেই আসামিরা একটি বারে বসে মদ্যপান করেছে। কোদি সুনি, মুহাম্মদ শফি এবং শিনোজ নামের এই আসামিদের থ্যালাসেরির ভিক্টোরিয়া বারের বাইরে একটি গাড়ির কাছে মদ্যপান করতে দেখা গেছে। রাজীব চন্দ্রশেখর বলেন, “পুলিশের পাহারায় থাকা অবস্থায় টিপি চন্দ্রশেখরণ হত্যা মামলার আসামিরা বারে বসে মদ্যপান করছে – এই দৃশ্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।”
আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ
রাজীব চন্দ্রশেখর অভিযোগ করেন, কেরালার এলডিএফ সরকার আইন-শৃঙ্খলা এবং স্বরাষ্ট্র বিভাগের নিয়ন্ত্রণ দলীয় গুন্ডাদের হাতে তুলে দিয়েছে। তিনি বলেন, “গত দুই দিনের ঘটনাগুলো থেকেই বোঝা যায় কেন কেরালার আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।” তিনি আরও বলেন, আদালতের রায়ে সদানন্দন মাস্টারের উপর হামলাকারীদের সাজা নিশ্চিত হওয়ার পরও সিপিআই(এম) তাদের কারাগারে ফেরাটাকে উৎসবে পরিণত করেছে। এর আগে টি.পি. চন্দ্রশেখরণ হত্যা মামলার এক আসামি মারা গেলে তাকে ‘বীর শহীদ’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। সিপিআই(এম) এমন অপরাধীদের সম্মানে শহিদ মিনারও তৈরি করে বলে তিনি দাবি করেন।
Kerala : কেরালার আলেপ্পিতে পোড়া মানবদেহাংশ উদ্ধার , ৬ মহিলার নিখোঁজ রহস্য
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
নিয়ম অনুযায়ী, কারাগারের বাইরে থাকা আসামিদের সার্বক্ষণিক পুলিশি পাহারায় থাকতে হয়। কিন্তু ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, টি.পি. চন্দ্রশেখরণ হত্যা মামলার আসামিরা পুলিশের উপস্থিতি ছাড়াই বন্ধুদের আনা মদ্যপান এবং খাবার খাচ্ছিল। এই ঘটনা পুলিশের ভূমিকা এবং আচরণ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।