Kasba law college accused by BJP

ব্যুরো নিউজ ৩০ জুন: দক্ষিণ কলকাতার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি এখন সরগরম। প্রধান অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের পর এই ঘটনায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। বিজেপি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে, বিশেষ করে অভিযুক্তদের রাজনৈতিক আশ্রয় এবং অনিয়মের মাধ্যমে কলেজে ভর্তি করানোর অভিযোগ তুলেছে।

অভিযুক্ত জইব আহমেদের ভর্তি নিয়ে বিজেপির আইটি সেলের প্রশ্ন

সোমবার, বিজেপি’র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজ গণধর্ষণ কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত জইব আহমেদ-এর কলেজে ভর্তি নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। মালব্য দাবি করেছেন, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত সাউথ ক্যালকাটা ল’কলেজের পড়ুয়া জইব আহমেদ। CULET-UG 2024 ল’এন্ট্রান্স পরীক্ষায় মাত্র ২৬৩৪ র্যাঙ্ক করেছিল সে। তা সত্ত্বেও সে এই কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। অথচ তার থেকে বেশি মেধাবী, বেশি নম্বর প্রাপ্ত আইনরক্ষাকারী পড়ুয়ারা সুযোগ পাননি ভর্তি হওয়ার।”
অমিত মালব্যের প্রশ্ন, “গৌরবের এই কলেজে কীভাবে ভর্তির সুযোগ পেল জইব আহমেদ? কে তাকে রক্ষা করছে? আমাদের উত্তর চাই। অবিলম্বে এই প্রশ্নের জবাব চাই।” তিনি শাসকদল তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় স্বাগত। এখানে আইনের শাসন কৌতুকে পরিণত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলি ধারাবাহিক ভাবে ভাঙা হয়েছে। ক্রিমনালকে সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে রাজনৈতিক কানেকশনের উপর ভিত্তি করে।”

ওপার বাংলায় তরুণী ধর্ষণ রাজনৈতিক প্রভাবশালী দ্বারা ! নারী সুরক্ষা এবং সন্মান বিলুপ্তির ছায়া গোটা বাংলায় ।

ঘটনার বিবরণ ও সিসিটিভি ফুটেজ

কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায়ের পাশাপাশি জইব আহমেদকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তপসিয়ার বাসিন্দা জইব বর্তমানে সাউথ ক্যালকাটা ল’কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং তার বয়স ১৯/২০ বছর মাত্র।
পুলিশের হাতে সাউথ ক্যালকাটা ল’কলেজের সাড়ে ৭ ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রাতে আতঙ্কিত অবস্থায় নির্যাতিতা গেটের কাছে আসছেন। গেটে তালা দেখে তিনি অসহায় হয়ে পড়ছেন। তখন দুই অভিযুক্ত তাকে জোর করে টানতে টানতে গার্ড-রুমের দিকে নিয়ে যায় এবং সেখানেই ঘটে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা। তদন্তকারীরা ঘটনার মুহূর্তের বেশ কিছু আপত্তিকর ভিডিও উদ্ধার করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, মনোজিতের নির্দেশে ওই ভিডিওগুলি তুলেছিল জইব ও প্রমিত। মনোজিতের নির্দেশ ছিল, ‘সব ভিডিও উড়িয়ে দে’, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।

শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিবাদ ও কসবা অভিযান

কসবা আইন কলেজের এই বর্বরোচিত ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গোলপার্ক থেকে গড়িয়াহাট পর্যন্ত মিছিল করেন। মিছিল শেষে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাত্র রাজনীতি ও মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন।
শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, “আগামী ২ জুলাই কসবা অভিযান হবে। মা-বোনেরা ঝাঁটা নিয়ে আসবেন। হাজার হাজার মানুষ পথে নামবেন। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।” তিনি আরও বলেন, “আমি কয়েকদিনের মধ্যে আরজি করের নির্যাতিতার বাড়ি যাব। বাবা-মাকে বলব, গতবছর ছাত্র সমাজ নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল। আমি বলব ৯ অগাস্ট আপনারা নবান্ন অভিযানের ডাক দিন। আমি রাজনৈতিক পতাকা দূরে রেখে, ওই দিন ২৬-এর নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও একবার দেখিয়ে দিতে চাই, আপনি আমাদের বাড়ির কন্যাদের সম্ভ্রম এভাবে কেড়ে নিতে পারেন না।”

আলিপুরদুয়ারের জনসভায় মোদীর বার্তা : ‘নির্মম সরকার’কে উপড়ে ফেলে ‘অপারেশন পশ্চিমবঙ্গ’র ডাক!

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

শুভেন্দু অধিকারী পুলিশের ভূমিকা নিয়েও তীব্র অভিযোগ তুলেছেন। তিনি পুলিশকর্তা মনোজ ভার্মার নাম করে বলেন, “মনোজ ভার্মা কোথায় লুকিয়ে দিলেন সেই ছাত্রী ও তার বাবা-মাকে? রাজ্য মহিলা কমিশনের কোনও ভূমিকা নেই আজ। মনোজ ভার্মা, আপনার অবস্থাও বিনীত গোয়েলের থেকে খারাপ হবে।” তিনি আরও বলেন, “আজ দু’ছেলের বাবা, বিবাহিতরাও ছাত্রনেতা। কলেজ-ইউনিভার্সিটি দখল করে নিয়েছে গ্যাংরা। যে দুষ্কৃতীরা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়ছে এবং শাসকদলের বিরুদ্ধে বিজেপি’র আক্রমণ আরও তীব্র হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর