ব্যুরো নিউজ ২৫ জুলাই ২০২৫ : কার্গিল যুদ্ধের বীর সেনানীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী আগামী শনিবার (২৬শে জুলাই) ২৬তম কার্গিল বিজয় দিবস উপলক্ষে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ উন্মোচন করতে চলেছে। এই প্রকল্পগুলির লক্ষ্য হলো ভারতীয় সৈন্যদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানো এবং সশস্ত্র বাহিনীর সাথে সাধারণ মানুষের সচেতনতা ও সংযোগ বৃদ্ধি করা।
সেনাবাহিনীর তিনটি প্রকল্প কী কী?
১. ‘ই-শ্রদ্ধাঞ্জলি’ পোর্টাল: এই উদ্যোগগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান হলো ‘ই-শ্রদ্ধাঞ্জলি’ পোর্টাল চালু করা। এই প্ল্যাটফর্মে নাগরিকরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর শহীদদের প্রতি ডিজিটাল শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। এটি দেশের মানুষের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং দেশের সেবায় আত্মত্যাগকারী বীরদের স্মরণ করার একটি সহজ অথচ অর্থপূর্ণ উপায় সরবরাহ করবে।
‘ই-শ্রদ্ধাঞ্জলি’ প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য দিতে গিয়ে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, “স্মারকস্থলে না গিয়েও নাগরিকরা এখন দেশের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারী বীরদের প্রতি ই-শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে পারবেন।” তিনি আরও বলেন, সশস্ত্র বাহিনী যে আত্মত্যাগ করে এবং তাদের দায়িত্ব পালনের সময় যে কঠোরতার মুখোমুখি হয়, সে সম্পর্কে মানুষকে সংবেদনশীল করার জন্য এই প্রকল্পটি চালু করা হচ্ছে।
২. কিউআর কোড-ভিত্তিক অডিও অ্যাপ্লিকেশন: দ্বিতীয় প্রকল্পটি হলো একটি কিউআর কোড-ভিত্তিক অডিও অ্যাপ্লিকেশন, যা ব্যবহারকারীদের ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধগুলির শক্তিশালী গল্প শুনতে দেবে। টোলোলিংয়ের রুক্ষ ভূখণ্ড থেকে টাইগার হিলের বরফাবৃত উচ্চতা পর্যন্ত, এই নিমগ্ন অভিজ্ঞতা ভারতীয় সৈন্যদের অবিশ্বাস্য প্রতিকূলতা অতিক্রম করার সাহস ও সংকল্পকে জীবন্ত করে তুলবে। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা আরও বলেন, “ধারণাটি জাদুঘরের মতো, যেখানে দর্শকরা ইয়ারফোন ব্যবহার করে প্রদর্শনীগুলির বিবরণ শুনতে পারেন। এখানে মানুষ সৈন্যদের সাহস, বীরত্ব, এবং আত্মত্যাগের গাথা শুনতে পারবেন।”
৩. সিন্ধু ভিউপয়েন্ট: তৃতীয় উদ্যোগটি হলো সিন্ধু ভিউপয়েন্ট – বাটালিখ সেক্টরের একটি কৌশলগত অবস্থান যা নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) পরিদর্শনের এক বিরল সুযোগ দেবে। এই নতুন পর্যটন কেন্দ্রটি পরিদর্শকদের মধ্যে দেশপ্রেম এবং উপলব্ধির গভীর অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে, কারণ তারা সীমান্ত রক্ষার কঠোর বাস্তবতা প্রত্যক্ষ করবে। কর্মকর্তা আরও বলেন, “এটি পরিদর্শকদের একটি ধারণা দেবে যে সৈন্যরা কী পরিস্থিতিতে কাজ করে, এবং দেশকে নিরাপদ রাখতে তারা প্রতিদিন যে অসুবিধা ও নিরন্তর বিপদের সম্মুখীন হয়।”
Operation Sindoor : ভারতীয় রাফালের ‘ভৌতিক’ রণকৌশলে চীন-পাকিস্তানের অপপ্রচার ফাঁস !
কার্গিল যুদ্ধ ১৯৯৯
কার্গিল বিজয় দিবস প্রতি বছর ২৬শে জুলাই ভারতের কার্গিল যুদ্ধে বিজয় স্মরণে পালিত হয়। ১৯৯৯ সালের এই দিনে, ভারতীয় সেনাবাহিনী সফলভাবে ‘অপারেশন বিজয়’ সম্পন্ন করে, যেখানে প্রায় তিন মাস ধরে অত্যন্ত উচ্চতার অঞ্চলে তীব্র যুদ্ধের পর পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানগুলি পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল। বাটালিখ কার্গিল যুদ্ধের অন্যতম প্রধান যুদ্ধক্ষেত্র ছিল। ১০,০০০ ফুটের বেশি উচ্চতায় অবস্থিত বাটালিখ কার্গিল, লেহ এবং বালতিস্তানের মধ্যে এর কৌশলগত অবস্থানের কারণে কার্গিল যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু ছিল।